ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট, ২০২৫

‘স্বৈরাচারের দোসর’ শিক্ষকদের বিচার চেয়ে রাবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২৫, ০৫:৩৯ পিএম
রাবিতে ২১ শিক্ষকের নাম ও ছবি প্রকাশ করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিরোধিতাকারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২১ শিক্ষকের নাম ও ছবি প্রকাশ করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। 

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেল ৩টায় এ দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

সমাবেশ শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে প্যারিস রোড থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। 

এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ‘ফ্যাসিস্টের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘বছর গেল পেরিয়ে আওয়ামী লীগের দোসর কেন বাহিরে’, ‘সুপারিশ, স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ বাণিজ্য এই ক্যাম্পাসে চলবে না’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘প্রশাসনের কালো হাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী দোসর সকল শিক্ষককে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব। প্রশাসন আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে প্রতারণা করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে আজ ২১ জন ফ্যাসিবাদের দোসর শিক্ষকের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেছি, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দ্রুত তাদের প্রচলিত আইনের আওতায় আনতে পারে।’

আওয়ামীপন্থি ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের বিচারের আগে রাকসু নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শাকিলুর রহমান সোহাগ।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন একপাক্ষিক একটি জামায়াতি সংগঠনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ এই প্রশাসনের প্রথম কাজ ছিল আওয়ামী দোসরদের বিচার করা। আওয়ামীপন্থি ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের বিচারের আগে রাকসু নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।’

সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল মিঠু বলেন, ‘আপনি যদি স্বৈরাচারের দোসর উপাচার্যকে দেখতে চান তাহলে তার বিভাগে যান, যার অনুমতি নিয়ে ক্যাম্পাসে গুলি করা হয়েছিল সেই প্রক্টর আসাবুলকে দেখতে চাইলে গণিত বিভাগে যান। বর্তমান প্রশাসনের আমলে এসেও তারা বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, এসির বাতাস খাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান থাকবে, আপনারা অনতিবিলম্বে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসুন। অন্যথায় ছাত্রদল কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।’

এদিকে গণঅভ্যুত্থানে বিরোধীতাকারী শিক্ষকদের ছাত্রদলের করা তালিকায় নাম রয়েছে: বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, সাবেক সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস এম একরামুল্লা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ, সাবেক সহ-উপাচার্য ও রসায়ন বিভাগের বর্তমান সভাপতি চৌধুরি মো. জাকারিয়া, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক বোরাক আলী, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, আইন বিভাগের অধ্যাপক আবু নাসের ওয়াহেদ, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মো. ওমর ফারুক সরকার প্রমুখ।