ঢাকা রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে দুটি জরিপ প্রকাশ, প্রশ্ন রয়েছে নিরপেক্ষতা নিয়ে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ০৯:২৫ এএম
ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে ‘সোচ্চার’ এবং ‘ন্যারেটিভ’ নামের দুটি সংগঠন দুটি জরিপ প্রকাশ করেছে। দুই জরিপেই ছাত্রশিবির এগিয়ে রয়েছে বলে উঠে এসেছে। অবশ্য, জরিপ দুটির ফল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া বিভিন্ন প্যানেলের মধ্যে।

তারা বলেন, এসব জরিপ নিরপেক্ষ নয়। কেননা জরিপকারী একটি সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শিবিরের প্যানেল থেকে ডাকসু নির্বাচনে সদস্য পদে অংশ নিচ্ছেন। ছাত্রশিবিরের পক্ষের লোকেরা এসব জরিপ প্রকাশ করছে বলে অভিযোগ তাদের।

জানা গেছে, জরিপ পরিচালনাকারী ‘সোচ্চার’ এবং ‘ন্যারেটিভ’-এর সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সাবেক কয়েকজন নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্টতা আছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ‘ন্যারেটিভ’ নামের সংগঠনটির ব্যানারে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও তৎপরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: প্রাপ্তি, প্রত্যাশা, আগামীর বাংলাদেশ ও অন্যান্য’। সেখানে অন্যতম আলোচক ছিলেন ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদ।

ন্যারেটিভ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, তারা ৫২৬ শিক্ষার্থীর ওপর জরিপটি করেছে। গত ৩০ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জরিপে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

জরিপে প্রশ্ন ছিল ডাকসু নির্বাচনের শুধু তিন শীর্ষ পদ—সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) নিয়ে। জরিপে ১৪টি হলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে তথ্য নেওয়া হয়। প্রতিটি হল থেকে তথ্য নেওয়া হয় গড়ে ৩৮ জনের কাছ থেকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংখ্যা ১৯। ছাত্রদের ১৪টি আর ছাত্রীদের ৫টি। জরিপে ছেলেদের ১০টি ও মেয়েদের ৪টি তথ্য থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছে। অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হয়নি। ভোটারদের বেশির ভাগ অনাবাসিক।

সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফল তুলে ধরেন ন্যারেটিভের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ রুহেল। তিনি জানান, ডাকসুতে ভোট দিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় ৯৫ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশ আগ্রহী নন।

অন্যদিকে, ‘সোচ্চার’-এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আনাস বিন মুনির। তিনি ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্যানেল থেকে এবারের ডাকসু নির্বাচনে সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন।

যদিও আনাস বিন মুনির বলেন, জরিপটি করেছে সোচ্চারের বাংলাদেশ শাখা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। জরিপের সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই।

এসব জরিপে শিবিরের সম্পৃক্ততা নিয়ে জানতে চাইলে শিবিরের প্যানেলের এজিএস প্রার্থী মহিউদ্দীন খান বলেন, জরিপ দুটি শিবিরের দ্বারা প্রভাবিত বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তা সঠিক নয়।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (০৫ সেপ্টেম্বর) ‘সোচ্চার’ নামের সংগঠন একটি জরিপ প্রকাশ করে। অনলাইনে গুগল ফরমের মাধ্যমে গত ১ থেকে ২০ আগস্ট ৯৯১ জনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপটিতে শুধু ভিপি পদে কোন সংগঠনের প্রার্থীর বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তা তুলে ধরা হয়।

আর ‘ন্যারেটিভ’ জরিপ চালায় গত ৩০ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। যে জরিপ চালানো হয় ৫২৬ শিক্ষার্থীর ওপর। যার ফল প্রকাশ করা হয় শনিবার (০৬ সেপ্টেম্বর)।