ঢাকা সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী-ভোটারদের মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ১২:৫৩ পিএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামীকাল। নির্বাচন সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভোটার ও প্রার্থী উভয়কে মানতে হবে কঠোর নিয়ম-কানুন।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে এবং প্রতিটি কেন্দ্রের ফল সরাসরি প্রদর্শনের জন্য এলইডি স্ক্রিনও বসানো হয়েছে।

ভোট গণনা দেখানো হবে এলইডি স্ক্রিনে

নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে ফল সরাসরি প্রদর্শন করা হবে। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ভোটকেন্দ্রে নিষিদ্ধ জিনিসপত্র

ভোটারদের সতর্ক করা হয়েছে, ভোটকেন্দ্রে ব্যাগ, মোবাইল ফোন, স্মার্টওয়াচ, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, পানির বোতল ও তরল পদার্থ বহন করা যাবে না। এর মাধ্যমে ভোটিংয়ের সময় নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা হবে।

ভোটকেন্দ্র ও বুথ সংখ্যা

ভোটগ্রহণ ৮টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে, যা আগের ৭১০টির থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। নির্বাচকরা জানিয়েছেন, একজন ভোটার গড়ে ১০ মিনিট সময় নিলেও কোনো বিঘ্ন ছাড়া সব ভোটার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভোট দিতে পারবেন।

শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে শাটল সার্ভিস

ভোটদানের সুবিধার্থে ক্যাম্পাসে শাটল সার্ভিস চালু থাকবে। সকাল ৭টা ৪৫ মিনিট থেকে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ভূতত্ত্ব বিভাগ থেকে কার্জন হল, শাহবাগ, টিএসসি, উদয়ন স্কুল, শিক্ষক ক্লাব, সিনেট ভবন ও শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র পর্যন্ত চক্রাকারে শাটল চলবে।

নিরাপত্তা ও প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ

নির্বাচন উপলক্ষে সোমবার রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রবেশপথগুলো (শাহবাগ, পলাশী, দোয়েল চত্বর, শিববাড়ি ক্রসিং, ফুলার রোড, উদয়ন স্কুল ও নীলক্ষেত) সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে। বৈধ আইডি কার্ডধারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রবেশ করতে পারবেন।

শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যরা নিজের পরিচয়পত্র এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের পরিচয়পত্রের কপি দেখিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। জরুরি সেবার জন্য স্টিকারযুক্ত যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যতীত অন্য কোনো যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না।

ভোট প্রদানের প্রক্রিয়া

ডাকসু ভোট দিতে গেলে প্রথমে লাইনে দাঁড়িয়ে পরিচয় যাচাই করতে হবে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা পে-ইন স্লিপ বা লাইব্রেরি কার্ড দেখাবে, অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা হল কার্ড, বিশ্ববিদ্যালয় কার্ড বা লাইব্রেরি কার্ড দেখাবে।

পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর বুড়ো আঙুলের নখে অমুছনীয় কালিযুক্ত চিহ্ন দেওয়া হবে এবং ভোটার তালিকায় নিজের নামের পাশে স্বাক্ষর করতে হবে।

ভোটার গোপন কক্ষে গিয়ে ব্যালট পেপারে প্রার্থীর নামের পাশে ‘ক্রস’ চিহ্ন দিয়ে ভোট প্রদান করবে। ‘ক্রস’ চিহ্ন দিতে হবে। ‘টিক’ চিহ্ন দিলে ভোট গ্রহণযোগ্য হবে না। ডাকসু ও হল সংসদের জন্য আলাদা ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হবে এবং ব্যালট ভাঁজ করা যাবে না।

ওএমআর ব্যালট ও দ্রুত ফল

এবার ভোটগ্রহণে ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রেকগনিশন) ব্যালট ব্যবহার করা হবে। নির্বাচনের শেষ হলে সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। প্রশাসন আশা করছে, ওএমআর ব্যালটের মাধ্যমে ফল দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে প্রকাশ হবে।

শিক্ষকের পর্যবেক্ষণ

নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য রাখতে শিক্ষকদের নিয়ে স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষক প্যানেল গঠন করা হয়েছে। নতুন ভোটারদের উৎসাহিত করতে বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যানদেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সাইবার বুলিং ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাইবার বুলিং বা অপপ্রচারের ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের গঠিত টাস্কফোর্স ও সাইবার নিয়ন্ত্রণ সেলের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশেষত ছাত্রী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাইবার বুলিং হলে তা মানবাধিকার পরিপন্থি হিসেবে গণ্য হবে। শিক্ষার্থীদের অনুরোধ, কোনো ধরনের অপপ্রচারে ছাড় দেওয়া হবে না।