বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম

নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে তিতুমীরকে আড়াল করা হয়েছে

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম

শহীদ তিতুমীরের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করে সরকারি তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

শহীদ তিতুমীরের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করে সরকারি তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বাংলার স্বাধীনতা ও কৃষক অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ শহীদ মীর নিসার আলি তিতুমীরের ১৯৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে সরকারি তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতি।

সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে তিতুমীরকে ক্রমেই আড়াল করা হয়েছে। তার সংগ্রাম, অবদান ও আত্মত্যাগ আজ ইতিহাসের পাতায় সীমাবদ্ধ, কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁর স্মরণে কোনো বড় উদ্যোগ নেওয়া হয় নাই। এমনকি তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত কলেজেও নেই বড় কোনো আয়োজন।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১০টায় তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের সিভিল সোসাইটি রিপ্রেজেন্টেটিভ আবুল কাশেম শেখ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকা-১৭ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ডা. এস. এম. খালিদুজ্জামান।  মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ. টি. এম. যায়েদ হোসেন।

এ ছাড়া কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক এম. এম. আতিকুজ্জামান এবং সমিতির শিক্ষক উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস মল্লিক বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন সতিকসাসের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও এশিয়ান টেলিভিশনের প্ল্যানিং এডিটর রফিকুল ইসলাম রলি, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার মানিক মুনতাসির এবং লেখক ও সাংবাদিক আবিদ আজম।

সভায় মুখ্য আলোচক এ. টি. এম. যায়েদ হোসেন বলেন, ‘তিতুমীর সাধারণ মানুষ ছিলেন না; তিনি ছিলেন হাফেজে কুরআন, দক্ষ লাঠিয়াল এবং বাংলার কৃষক সমাজের রক্ষক। কিন্তু তাঁর নামে যে কলেজ, সেখানে তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে রাষ্ট্রীয় বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বড় কোনো আয়োজন নেই। নতুন প্রজন্মকে তাঁর সংগ্রাম সম্পর্কে জানানোই হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘তাঁর বংশপরিচয় নিয়েও ভুল ধারণা ছড়িয়ে আছে। তিনি মীর বংশের ছিলেন না; ছিলেন সাঈদ বংশের। এসব তথ্য নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছাচ্ছে না, যা দুঃখজনক।’

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল কাশেম শেখ বলেন, ‘শহীদ তিতুমীর ছিলেন বিদ্রোহী নেতা। তিনি ইংরেজ ও জমিদারদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। আমি মনে করি, এখানে উপস্থিত প্রত্যেকেই একেকজন তিতুমীর। কারণ তিতুমীর মানুষের জন্য কাজ করেছেন, কৃষকের জন্য কাজ করেছেন। আজ তাঁর স্মরণে রাষ্ট্রীয়ভাবে আলাদা বাজেট থাকার কথা ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের এই সাংবাদিক সমিতির সংগঠনকে আমি ইউনেস্কোর সাথে সমন্বয় করে দেব, যাতে ভবিষ্যতে বৃহত্তর পরিসরে আয়োজন করতে পারে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা-১৭ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ডা. এস. এম. খালিদুজ্জামান বলেন, ‘ভারতবর্ষের মানুষের অধিকার আদায়ে প্রথম শহীদ তিতুমীর। তাঁর ইতিহাস আমাদের তরুণ প্রজন্মসহ সকলকে অনুপ্রেরণা দেয়। ২৪-এর আন্দোলন মূলত তিতুমীরের আন্দোলনেরই ধারক-বাহক।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁর যথাযথ মর্যাদা ও আলোচনা আমরা দেখতে পাই না। আরও দুঃখের বিষয় হলো, যে কলেজ তাঁর নামে সেখানে বড় কোনো আয়োজন করা হয়নি। সাংবাদিকরা যেমনভাবে তাঁকে স্মরণ করে আয়োজন করেছে, তা নিঃসন্দেহে মাইলফলক হয়ে থাকবে।’

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘বর্তমান তরুণ প্রজন্ম যদি তিতুমীরের সংগ্রাম, নেতৃত্ব, আত্মত্যাগ এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের আদর্শ সম্পর্কে জানতে না পারে, তাহলে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যাবে। অতীতকে ভুলে গিয়ে কোনো জাতি কখনো এগোতে পারে না। তিতুমীরের আন্দোলন কেবল সামরিক প্রতিরোধ ছিল না—এটি ছিল সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, যা আজও প্রাসঙ্গিক।’

বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, ‘পাঠ্যবই ও জাতীয় কর্মকাণ্ডে তিতুমীরকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয় না। অনেক শিক্ষার্থী তাঁর নাম শুনেছে, কিন্তু তাঁর সংগ্রামের গভীরতা জানে না। তাঁরা বলেন, তিতুমীরকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে হলে তাঁর জীবন, লড়াই ও দর্শন নিয়ে গবেষণা, প্রকাশনা, স্মারক অনুষ্ঠান এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।’

আলোচনা সভায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহিনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক সমিতির উপদেষ্টা শামিম হোসেন শিশির, তাওসীফ মাইমুন, সতিকসাসের সদস্যরা, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।

Link copied!