ঢাকা রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫

এইচএসসি ফরম পূরণে অনিয়ম, বরখাস্ত শিক্ষক

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৫, ০৮:০১ পিএম
সংবাদ সম্মেলন করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদার। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অনিয়মের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ ঘটনায় দ্বাদশ শ্রেণির শ্রেণি শিক্ষক ড. মো. আমিনুর রহমান দায়ী। 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, শ্রেণি শিক্ষকের দায়িত্বে অবহেলার কারণে দুইজন শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন ও ইয়াছিন আরাফাত 

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। ক্ষতিগ্রস্ত এই দুই শিক্ষার্থী প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে আবেদন করেছেন এবং এর আগে তারা শিক্ষা বোর্ডেও যোগাযোগ করেছেন।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমরা দুঃখ ভারাক্রান্ত। একজন শিক্ষকের দায়িত্বে অবহেলা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে কতটা বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।’

তিনি আরও জানান, এবার কলেজ থেকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ মিলিয়ে মোট ১৬১৩ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও ফরম পূরণ করা হয়েছে ১৬৯৩ জনের।

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ড. মো. আমিনুর রহমান তার শাখার সকল শিক্ষার্থীকে টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করালেও উত্তীর্ণ ৮২ জনের মধ্যে ২ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দিয়ে অন্য দুইজন ভুল শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করেন। 

অধ্যক্ষের ভাষায়, ‘এটি কোনো প্রক্রিয়াগত ভুল নয়, বরং একটি সুনির্দিষ্ট শিক্ষাগত অসদাচরণ ও নৈতিক লঙ্ঘন।’

ঘটনার পরপরই কলেজ কর্তৃপক্ষ ড. আমিনুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক শাস্তি এবং প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

অধ্যক্ষ জানান, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে আবেদনও করেছে যাতে এই দুই শিক্ষার্থী মানবিক বিবেচনায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে সহকারী অধ্যাপক ও শ্রেণি শিক্ষিকা দিল আফরোজ ডেইজি বলেন, ‘ড. আমিনুর রহমানই ছিলেন ঐ ক্লাসের মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক। তার ভুলের কারণেই দুই শিক্ষার্থী আজ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এক ধাপে পেছনে পড়ে গেছে। তিনি দাবি জানান, দায়ী শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম যেন আর না ঘটে, তার জন্য কঠোর নজরদারি থাকুক।