ঢাকা শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫

চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে কাজ করতে চাই: এলিনা শাম্মী

রেজা শাহীন
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২৪, ১২:২৬ পিএম
এলিনা শাম্মী। ছবি: সংগৃহীত

চলতি মাসের ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে তানভীর হাসান পরিচালিত প্রথম সিনেম ‘মধ্যবিত্ত’। সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেত্রী এলিনা শাম্মীকে। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার অভিনীত বেশকিছু সিনেমা। কাজ ও সমসাময়িক প্রসঙ্গে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী।

দরদ
বিভিন্ন কারণে ‘দরদ’ সিনেমাটি আলোচনায় ছিল। ব্যবসা কতখানি কি হচ্ছে সেটার চেয়ে বড় কথা হলো সিনেমাটি আলোচনা-সমালোচনার তুঙ্গে ছিল। সে জায়গা থেকে সবারই প্রত্যাশ ছিল ভালো একটা কাজ হবে। ভালো মন্দ এখনো বোঝা যাচ্ছে না কারণ, অনেক হলে এখনো সিনেমাটি চলছে। আমার জায়গা থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি। অনেকে ফোন করে তাদের ভালো লাগা জানিয়েছেন। যদিও প্রথম দিকে সিনেমাটির প্রচারণায় ছিলাম না। সিনেমার যাতে ক্ষতি না হয় সে চিন্তা করে পরবর্তীতে প্রচারণায় যুক্ত হই।

অভিজ্ঞতা
শাকিব খানের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ ব্যবসাসফল সিনেমা ‘প্রিয়তমা’য়। এরপর ‘দরদ’-এ একসঙ্গে কাজ করা। তার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। তাকে নিয়ে অনেক ভুল ধারণা ছিল তা পাল্টে গেছে একসঙ্গে কাজ করে। দুটি সিনেমাতেই শাকিব খান দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। কাজ করতে গিয়ে তার সহযোগিতা এবং পরামর্শ পেয়েছি। তিনি যে মানের শিল্পী এবং যে পরিমাণ অভিনয়ের দক্ষতা তার ভেতর আছে। সে দিক থেকে ভাবলে এটা বলতেই হয় তাকে কাজে লাগাতে পারেনি পরিচালকরা। অথবা তিনি সুযোগ পাননি নিজেকে তুলে ধরার।

মধ্যবিত্ত
আগামী ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে। সিনেমাটিতে আমার চরিত্রের নাম রানু। আমাকে ঘিরেই এর গল্প। রানু মেয়েটা বিভিন্ন টানাপোড়েনে পড়ে। মধ্যবিত্ত ঘরের একটা মেয়ে কি কি ধরনের সমস্যায় পড়ে এবং সেখান থেকে কিভাবে উৎরে যেতে হয় এই বিষয়টি সিনেমায় প্রাধান্য পেয়েছে। আমি যে এই সিনেমায় মূল চরিত্রে কাজ করেছি এই বিষয়টি পরিচালক বলতে নারাজ। কোনো সাক্ষাৎকারে কেউ বলেনি। এমনকি পোস্টার এবং ট্রেলারে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তারা যেভাবে প্রচার করেছে আমি যদি বলি আমি প্রধান চরিত্র এটা বললে তো এখন মিথ্যাবাদী হয়ে যাবো। আমি নিজেই কনফিউজড এই সিনেমাতে আমাকে কিভাবে প্রেজেন্ট করা হবে।

নাটকে কম
বেশকিছু দিন কাজ করা হচ্ছে না। আপাতত সিনেমা নিয়েই আছি। নাটকে কাজ করার মতো পছন্দ গল্প পাইনি বলেই কাজ করা হচ্ছে না। আরেকটা কারণ হচ্ছে ইউটিউবের দৌরাত্ম্য। ভিউর চিন্তা করে নাটক তৈরি করা হয়। তবে ভালো গল্প পেলে নাটকেও কাজ করতে চাই। সিনেমা এবং নাটক ছাড়াও ওটিটিতে আমি খুবই আগ্রহী।

লেখায় অনিয়মিত
নিয়মিত লিখছি না ব্যাপারটা এমন নয়। লিখছি তবে খুব বেশি লিখছি না। আমার লেখা ৪৩টি নাটক প্রচার হয়েছে। আরও কিছু নাটক লেখা হয়েছে সেগুলো সামনে মুক্তি পাবে। আমি সময় নিয়ে লিখি। তাড়াহুড়ো করে কিছুই করি না। তবে অভিনয়শিল্পী হিসেবে নিজেকে ফোকাস রাখতে চাই। অভিনয় যদি আর না করি তখন লেখালেখিতে মনোযোগ দেব। নাটক লেখা ছাড়াও ‘গন্তব্য’ সিনেমা আমার লেখা। সমানে আর কিছু সিনেমার গল্প লেখার ইচ্ছে আছে।

যে চরিত্র এখনো করা হয়নি
এ রকম বহু চরিত্র আছে। চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে কাজ করতে চাই। চ্যালেঞ্জিং মানে সত্যিকারের চ্যালেঞ্জিং। সাহসী এবং চ্যালেঞ্জিং এই দুইটা শব্দের অর্থ আমাদের দেশে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়। বস্ত্রহীনতাকে চ্যালেঞ্জিং বলা এটা খুবই মূর্খতা আমার কাছে। মানুষ যত বস্ত্রহীন হবে তাকে তত চ্যালেঞ্জিং বলে এটা কোন ধরনের কথা। অভিনয় এসবের উপর নির্ভর করে না। শরীর প্রদর্শন করা মানে অভিনয় না। অভিনয়ের মূল জয়াগা হলো চোখ এবং চেহারা। আমরা একটা ভুল থিওরির মধ্যে আছি। রাজ্জাক স্যার এবং শাবানা ম্যাম তারা কিন্তু হাত ছোঁড়াছুড়ি করে অভিনয় করেননি। তারা চেহারা এবং চোখ দিয়ে অভিনয় করেছেন, যোগত্য দিয়ে অভিয়ন করেছেন। এখন অনেকেই ধীরে ধীরে শোধরাচ্ছে। যেমন শাকিব খান নিজেই নিজেকে ভাঙ্গছে, সংস্কার করছে। দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে নিজে তৈরি করছে।

অবসর
অবসর সময়ে নিজের কাজ দেখি। অন্যদেরও কাজ দেখি। বাইরের সিনেমা দেখা হয়। লেখালেখি করি। শুধু যে নাটক লেখি তা নয়, প্রবন্ধও লেখি। একটা পান্ডুলিপি রেডি করছি এই বইমেলায় বের করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ অবধি বের হচ্ছে না। আমি আরেকটু সময় নিতে চাচ্ছি। আশা করি, পরের বছর আমার বই বের হবে।

পরিকল্পনা
নতুন বছরে ভালো কাজ করার পরিকল্পনা আছে। দেশে কাজ করার নতুন একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এতদিন লেজুড়বৃত্তিক কাজ করার চেষ্টা করেছে অনেকে। নির্দিষ্ট গণ্ডির এবং নির্দিষ্ট লোকের মাধ্যমে কাজ হয়েছে। আমি চাই প্রতিভাবানরা কাজের সুযোগ পাক। সাংস্কৃতিক জায়গায় সংস্কার না হলে রাজনৈতিক সংস্কার করে লাভ নেই।