৭১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দুইটি বিভাগে জয়ী হওয়ার পর শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে কেরালার রাজনৈতিক মহল পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। এই প্রেক্ষাপটে পুরস্কারের জুরি বোর্ড বা বিচারকমণ্ডলীর প্রধান আশুতোষ গোয়ারিকর খোলাসা করলেন, কেন বিতর্কিত এই ছবিকে দুইটি জাতীয় স্বীকৃতি দেওয়া হলো।
তিনি জানান, ছবিটির সিনেমাটোগ্রাফি ছিল ‘স্টার্ক অ্যান্ড রিয়্যালিস্টিক’, অর্থাৎ অত্যন্ত বাস্তবধর্মী এবং কাহিনির আবহের সঙ্গে মানানসই।

গোয়ারিকর বলেন ‘ছবির বার্তাটি কঠিন, তবে সেটিকে যে স্বচ্ছতার সঙ্গে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা আমাদের মুগ্ধ করেছে’।
পরিচালক সুদীপ্ত সেন পেয়েছেন সেরা পরিচালকের পুরস্কার, আর প্রশান্তনু মহাপাত্র পেয়েছেন সেরা সিনেমাটোগ্রাফির জন্য সম্মান।
কিন্তু এই স্বীকৃতি নিয়ে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

এক্স-এ দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এই ছবিটি মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে কেরালার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে এবং সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। এই ধরনের প্রচারচলিত্রকে পুরস্কৃত করা মানেই বিভাজনের রাজনীতিকে মান্যতা দেওয়া।’
তিনি আরও লেখেন, ‘যে কেরালা চিরকাল সম্প্রীতির মডেল ছিল, সেই কেরালাকে অপমান করা হয়েছে এই স্বীকৃতির মাধ্যমে। শুধু কেরালাবাসী নয়, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী প্রত্যেককে সত্য ও সাংবিধানিক মূল্যবোধের পক্ষে দাঁড়াতে হবে।’
শুধু মুখ্যমন্ত্রী নন, কেরালার শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবনকুট্টিও বলেছেন, এটি একটি ‘ঘৃণামূলক প্রচারচলচ্চিত্র’, যাকে পুরস্কৃত করে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া সুধীপ্ত সেন পরিচালিত ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবি প্রথম থেকেই বিতর্কে জড়ায়। সিনেমাটির টিজারে দাবি করা হয়, কেরালা থেকে ৩২ হাজার নারীকে আইএসআইএস সদস্যরা পাচার করেছে,যা পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
আদালতের নির্দেশে ছবিটির ট্রেলার পরিবর্তন করে বলা হয়, এটি একটি ‘ফিকশন’। সিনেমাটি পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুর মতো কিছু রাজ্যে নিষিদ্ধও হয়েছিল, যদিও বক্স অফিসে ৩০০ কোটির বেশি আয় করেছে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, এক্স, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম
আপনার মতামত লিখুন :