দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলায় শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। উপজেলার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের থেকে সব দিক দিয়েই এগিয়ে রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এখানের শিক্ষকদের সুনিপুণ পাঠদানে শিক্ষার্থীরা হয়ে ওঠেন প্রকৃত মেধাবী।
শিক্ষার্থীদের ভালো-মন্দ বিষয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিভাবকদের সঙ্গে করা হয় আলোচনা। এতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রকৃত মেধাবী হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হচ্ছে। তারা নিজেদের শিরদাঁড়া উঁচিয়ে প্রমাণ দিচ্ছেন শ্রেষ্ঠত্বের।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের যখন চরম বিপর্যয়, তখনও লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজেদের বরাবরের মতোই সেরা হিসেবে প্রমাণ দিয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানের ১০৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪৫টি জিপিএ-৫ সহ জেলায় শতভাগ পাসের একক রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন।
কেবল এতেই সীমাবদ্ধ নয় লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার মাধ্যমে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২ জন মেধাবী শিক্ষার্থী অনুকরণীয় কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। তারা সবাই হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০২২ সালের এসএসসি ও ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
সেসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে- সৈয়দ মেহনাজ আক্তার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। ওই বিভাগে খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন বুশরা আহমেদ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন মো. মুশফিকুর রহমান। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন খাদিজা আলম মিম।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন সাবিকুন নাহার ফারিহা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগে ভর্তি হয়েছেন হাবিবা আফরিন নামে আরেক শিক্ষার্থীও। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন রেহনুমা ইসলাম।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে ভর্তি হয়েছেন মো. শিহাব। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়েছেন মাহমুদুল হাসান রকিব। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিন্ট ম্যাকিং বিভাগে ভর্তি হয়েছেন মো. সাইমুন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন আবদুল্লাহ আল ইফরান এবং কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছেন তাসিন জাহান।
এ ছাড়াও লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০২২ সালে এসএসসি ও অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২০২৪ সালে এইচএসসি সম্পন্ন করে আরো ৯ জন শিক্ষার্থী ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন।
সন্তানদের এমন সাফল্যে খুশি অভিভাবকরাও। এ জন্য তারা ধন্যবাদ জানিয়েছেন লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষসহ প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সবাইকে।
মো. আল-আমিন বিশ্বাস ও আব্দুস সাত্তার আলমগীর পাটোয়ারী নামে লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই অভিভাবক জানান, আমাদের সন্তানরা এই প্রতিষ্ঠান থেকে পড়ালেখা করে আজ দেশের সুনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সুযোগ পেয়েছে। তাদের এই সাফল্যের জন্য আমাদের পরে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করেছেন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিনসহ ওই প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষকরা।
সত্যিই এই প্রতিষ্ঠানটি আমাদের প্রত্যন্ত এ অঞ্চলের একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে শিক্ষার্থীদের পছন্দ মতো তাদের ভবিষ্যতের লক্ষ্য নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী নিয়মিত তদারকি করেন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। আমরা অভিভাবক হিসেবে সব সময় এই প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য কামনা করবো। কারণ তাদের সু-পরামর্শেই এখন আমাদের সন্তানরা সুন্দর ভবিষ্যতের পথে এগোচ্ছে।
এ বিষয়ে লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা বিষয়ভিত্তিক মেধাবী একঝাঁক শিক্ষক।
তাদের সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান করানো হয়। তবে আমাদের যেসব শিক্ষার্থীরা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে তারা সত্যিই অনেক মেধাবী। আমরা কেবল তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছি। তা মেনে চলে এখন সুন্দর একটি ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাচ্ছে তারা।
এ ছাড়া আমরা প্রতিটি শিক্ষার্থীকেই পড়ালেখার পাশাপাশি প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বদ্ধপরিকর। আমাদের লক্ষ্য; এখানের শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে একজন সুশিক্ষিত মানুষ হয়ে উঠবে এবং ভবিষ্যতে তারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশ ও জনগণের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখবে ইনশাআল্লাহ।
আপনার মতামত লিখুন :