নাটক, চলচ্চিত্র, ওয়েব সিরিজে ধূমপানসহ সকল নেতিকবাচক দৃশ্য বন্ধে আইন ও নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী ও কলা-কূশলীদেরকে প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে তথ্য ভবনে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির (বাচসাস) যৌথ আয়োজনে ‘ওরিয়েন্টেশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল ল ফর জার্নালিস্ট: রোল অব এন্টারটেইনিং মিডয়া’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উক্ত অভিমত আহ্বান জানান তারা।
অনুষ্ঠানে নাটক-চলচ্চিত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন এবং ওটিটি নীতি দ্রুত চূড়ান্তকরণ ও একটি গাইডলাইন প্রণয়নের সুপারিশ তুলে ধরেন বক্তারা।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুল জলিল।
গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের নানামুখী প্রচারণায় তামাকের নেতিবাচক প্রভাববিষয়ক প্রচারণা যুক্ত করার আশ্বাস দেন এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে গণমাধ্যম কর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে তামাকের স্বাস্থ্য ক্ষতি, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা ও নাটক, চলচ্চিত্রে আইন লঙ্ঘণের চিত্র ও করণীয় বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে মানস-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস-এর টেকনিক্যাল এডভাইজার আমিনুল ইসলাম সুজন ও মানসের প্রকল্প সমন্বয়কারী উম্মে জান্নাত।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন: ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস সিনিয়র টেকনিক্যাল এডভাইজার এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম ও ম্যানেজার (তামাক নিয়ন্ত্রণ) ফাহমিদা ইসলাম, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কামরুল হাসান দর্পন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহাত সাইফুল, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল’র প্রোগ্রাম অফিসার ডা. ফরহাদুর রেজা প্রমূখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মানসের সিনিয়র প্রজেক্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশন অফিসার মো. আবু রায়হান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বর্তমানে কিশোর-তরুণসহ প্রায় সব বয়সিদের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম নাটক, চলচ্চিত্র ও ওটিটি কনটেন্ট। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতার কারণে ‘কাহিনীর প্রয়োজন’ দোহাই দিয়ে অযাচিতভাবে চলচ্চিত্রে, নাটকে প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে ধূমপানের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলো তরুণসমাজকে টার্গেট করে ওটিটি প্লাটফর্মগুলোতেও তামাকের নেশায় উৎসাহিত করছে। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে বিনোদন মাধ্যমে যাতে নেতিবাচক বিষয়গুলো ফলাও করে প্রচার না করা হয়, সে বিষয়ে অভিনয় শিল্পী ও সংশ্লিষ্টদেরকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা হিসেবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড, চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক নিয়ম মেনে চলচ্চিত্র অনুমোদন, আইন লঙ্ঘন বিষয়ে নিয়মিত তদারকি এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
তারা বলেন, সাংবাদিকেরাও তামাকের সার্বিক ক্ষতি নিয়ে জনসচেতনতামূলক প্রতিবেদন, তামাক নিয়ন্ত্রন আইন লঙ্ঘন চিহ্নিত করে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন, ফলোআপ এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আইন প্রতিপালনের বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারেন। সর্বোপরি, সুস্থ বিনোদন মাধ্যমের জন্য, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রতিপালন এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের নীতিমালা চূড়ান্ত এবং আলাদা একটি গাইডলাইন প্রণয়নের দাবি জানান তারা।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি ধূমপান বিরোধী সামাজিক আন্দোলনে সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে বলে জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি।
অনুষ্ঠানে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা মতিহার, দপ্তর সম্পাদক রুহুল আমিন ভূঁইয়া, কার্যনিবাহী সদস্য সাজু আহমেদ, নিয়াজ শুভ। এ ছাড়া দুলাল খান, সুমন মোস্তফা, মাজহার বাবু, এমদাদুল হক মিল্টন, আশরাফুল আলম আসিফ, সুকন্যা আমীর, মো. মনিরুল ইসলাম সরকার (রঞ্জু), নাজমুল আহসান তালুকদার, শাহিন আলম শুভ, এ আর এম শাদাত, সাজিয়া ইসলাম স্বর্ণা, লিটন মাহমুদ, হিমু সুলতানা, মো. হোছাইন রুহানীসহ বিনোদন সংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন