নিজের ডেবিউয়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি রুপালী দুনিয়ায় এমন ছাপ ফেলেছিলেন যে, আজকের দিনেও তাকে তার দুর্দান্ত স্টাইল এবং সৌন্দর্যের জন্য মনে করছে সবাই। আসলে নিজের প্রতিভার জোরে ভক্তদের মন অচিরেই জয় করে নিয়েছিলেন সুন্দরী অভিনেত্রী শেফালী জারিওয়ালা। ‘কাঁটা লাগা’ খ্যাত এই নায়িকা এখন শুধুই স্মৃতি। মাত্র ৪২ বছরেরই থমকে গেল তার জীবন।
শেফালী জারিওয়ালা ২০০২ সালে ‘কাঁটা লাগা’ মিউজিক ভিডিওর মাধ্যমে রাতারাতি তারকা হয়ে ওঠেন। এই রিমিক্স গানটি তাকে ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ হিসেবে সারাদেশে পরিচিতি এনে দেয়। তার সাহসী চেহারা এবং নৃত্যশৈলী তৎকালীন পপ সংস্কৃতিতে একটি সাংস্কৃতিক ঘটনা হয়ে ওঠে। এরপর তিনি ‘কভি আর কভি পার’সহ আরও কয়েকটি মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেন। বাংলাদেশের একটি গানেও মডেল হয়েছিলেন তিনি।
২০০৪ সালে তিনি সালমান খান এবং অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘মুঝসে শাদি করোগি’ চলচ্চিত্রে একটি ছোট ভূমিকায় অভিনয় করেন। এছাড়াও তিনি কন্নড় চলচ্চিত্র ‘হুদুগুরু’, ওয়েব সিরিজ ‘বেবি কাম না’ এবং ‘রাত্রি কে যাত্রী’ নামে কয়েকটি প্রকল্পে কাজ করেছেন।
টেলিভিশন জগতে শেফালী ২০০৮ সালে ‘বুগি উগি’ রিয়েলিটি শো দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি তার স্বামী পারাগ ত্যাগীর সঙ্গে ‘নাচ বালিয়ে ৫’ এবং ‘নাচ বালিয়ে ৭’-এ অংশগ্রহণ করেন, যেখানে তাদের জুটি দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিল।
তবে তার জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায় সালমান খানের হোস্ট করা ‘বিগ বস ১৩’-এর মাধ্যমে। শো-তে তার সততা, সাহস এবং প্রাক্তন প্রেমিক সিদ্ধার্থ শুক্লার সঙ্গে পুনর্মিলনের মুহূর্তগুলো দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালে তিনি ‘শৈতানি রসমে’ নামে একটি টিভি শো-তে অভিনয় করে তার টেলিভিশন ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যোগ করেন।
শেফালীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সামাজিক মাধ্যমে শোকবার্তার বন্যা বয়ে গেছে। এক্স-এ ভক্তরা তার ‘কাঁটা লাগা’ ভিডিও এবং বিগ বস ১৩-এর স্মৃতি শেয়ার করছেন।
একজন ভক্ত লিখেছেন, শেফালী ছিলেন একজন সত্যিকারের তারকা। তার কাঁটা লাগা আমাদের কৈশোরের স্মৃতি। তিনি চিরকাল আমাদের হৃদয়ে থাকবেন। আরেকজন লিখেছেন, বিগ বস ১৩-এ তার সততা এবং সাহস আমাকে মুগ্ধ করেছিল। এত তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া খুবই দুঃখজনক।
শেফালী জারিওয়ালার অকাল মৃত্যু ভারতীয় বিনোদন জগতে একটি অপূরণীয় ক্ষতি। তার ‘কাঁটা লাগা’ থেকে শুরু করে বিগ বস ১৩ এবং ‘শৈতানি রসমে’ পর্যন্ত যাত্রা তার বহুমুখী প্রতিভার প্রমাণ। তিনি তার স্বামী পারাগ ত্যাগী এবং অসংখ্য ভক্তের স্মৃতিতে বেঁচে থাকবেন।
তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্তের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে, তবে তার উত্তরাধিকার ভারতীয় পপ সংস্কৃতি এবং টেলিভিশন জগতে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :