একজন তারকা কেক খাচ্ছেন- এই সাধারণ দৃশ্যও এই যুগে হয়ে উঠতে পারে ভাইরাল ট্র্যাজেডি। আর তারই এক নজির তৈরি করলেন অনন্ত জলিল ও বর্ষা। সম্প্রতি ঢাকার শান্ত মরিয়ম ইউনিভার্সিটিতে এক অনুষ্ঠানে ঘটে গেল এমন এক কেক-দৃশ্য, যা দেখে নেটিজেনরা এক হাতে পপকর্ন, আরেক হাতে মিম বানাতে ব্যস্ত!
ঘটনাটি ছিল এমন- অনুষ্ঠানের মাঝপথে এক তরুণী মঞ্চে উঠে অনন্ত জলিলকে কেক খাওয়াতে যান। পাশে বর্ষা দাঁড়িয়ে। তিনি মুহূর্তেই মুখ কালো করে একটু পাশ ঘেঁষে দাঁড়ান।
পরক্ষণেই যেন ‘ভূমিকম্প’! ভিডিও ভাইরাল, কটাক্ষে ভরে ওঠে ফেসবুক-ইনস্টা, কেউ বলেন ‘বর্ষার আগমনী বৃষ্টির পূর্বাভাস’, কেউ লেখেন ‘অনন্ত কেক খেলেন, বর্ষা হজম করলেন না!’
ভিডিও এডিটের ছুরিতে এমনভাবে সাজানো হয় বিষয়টি, যেন বর্ষা অভিমানে অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন।
ভাইরাল হয় শিরোনাম: ‘অনন্তকে কেক খাওয়ানোয় রেগে গেলেন বর্ষা!’ এইখানেই শুরু ট্রল-মজার পর্ব।
তবে নাটকের মোড় ঘোরায় বর্ষার নিজস্ব ব্যাখ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমি চিনি খাই না, তাই কেক খাইনি। যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেটা কেটে-কুটে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজেরাই এই ঘটনায় হেসেছি। কেক খাওয়ানো মেয়েটিকে চিনি না। সে নিজে থেকেই এগুলো করেছে। ফুলও দিয়েছিল আমাদের দু’জনকে।’
এতদিন পর্যন্ত মেয়েটি ছিলেন ‘রহস্যময়ী কেক-কন্যা’। এবার জানা গেল তার নাম- নাজমী জান্নাত। তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটির লেকচারার এবং অনুষ্ঠান আয়োজক প্রতিষ্ঠান বিজনেস জিনিয়াস বাংলাদেশ-এর সিইও ও ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। তার বাড়ি সাভারে এবং তার বাবা দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সাভার প্রতিনিধি।
ঘটনার আরেক প্রান্ত থেকে মুখ খোলেন অনুষ্ঠান স্পন্সর পারফেক্ট ইলেকট্রনিক্স-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও শাহরিয়ার কবীর। তিনি বলেন, ‘আমি অনন্ত ভাইয়ের পাশেই মঞ্চে ছিলাম। মেয়েটিকে কেউ বলেনি কেক খাওয়াতে, ফুল দিতে। সে নিজে থেকেই করেছে। না জেনে কাউকে নিয়ে বলা ভুল।’
নেটিজেনদের দৌরাত্ম্যে পুরো ঘটনায় যুক্ত হয়েছে একরাশ হাস্যরস, একগাদা মিম, আর কিছু রসিকতা। কেউ লিখেছেন, ‘ভাগ্যিস কেকটা অনন্ত নিজেই খান, না হলে হয়তো বর্ষার বজ্রপাত হতো!’
এডিটিংয়ের এই রঙিন দুনিয়ায় সাধারণ মুহূর্তও হয়ে উঠতে পারে ভাইরাল ‘ড্রামা’। তবে অনন্ত-বর্ষার মতো তারকারা জানেন কীভাবে এমন ‘কেক-সংক্রান্ত’ ঝড়কেও হালকাভাবে নিতে হয়।
এই ঘটনা হয়তো ভুলে যাবে সবাই, কিন্তু কেক-কাণ্ড থেকে প্রমাণ হয়, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ‘কে কাকে খাওয়ালো’, সেটাও একটা ইস্যু দাঁড়াতে পারে!