ঢাকা শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫

যে কারণে আলোর মুখ দেখেনি সাকিবের গোপন চলচ্চিত্র

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৫, ০৬:৩৬ পিএম
সাকিব আল হাসান। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের ক্রিকেটের বরপুত্র সাকিব-আল-হাসান। মাঠ ও বাইরের বিভিন্ন ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রে থাকেন প্রতিনিয়ত। সাম্প্রতিক সময়েও নিজের বিতর্কিত রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, ব্যবসায়িক ব্যর্থতা ও মাঠের ক্রিকেটে ফেরার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনায় রয়েছেন এ ক্রিকেট আইকন।

তবে এসবের মধ্যেই হঠাৎ করে যেন পুরো মিডিয়াকে নাড়িয়ে দিল সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ও চাঞ্চল্যকর একটি তথ্য।

সাকিব-ভক্তরা কি জানতেন, একসময় সিনেমার ক্যামেরার সামনেও ধরা দিয়েছিলেন তাদের প্রিয় অলরাউন্ডার? হ্যাঁ, সেই গল্প আজ নতুন করে সামনে এসেছে। তবে তার চেয়েও বড় প্রশ্ন- সেই সিনেমা কেন আর আলোর মুখ দেখেনি?

এক যুগ আগে ‘সবকিছু পেছন ফেলে’ নামের এক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন সাকিব আল হাসান। গল্প ছিল শহরের পাঁচ তরুণ-তরুণীর জীবনঘনিষ্ঠ এক গল্প।

‘সবকিছু পেছন ফেলে’ ছবির শুটিংয়ে সাকিব আল হাসান। ছবি- সংগৃহীত

সেই গল্পের এক বিশেষ অতিথি চরিত্রেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান সাকিব। এমনকি কক্সবাজারে তার শুটিংও হয়। কিন্তু ঘটনার মোড় ঘুরে যায় তখনই, যখন গণমাধ্যমে এ অভিনয়ের খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন তিনি।

গোপন থাকলে হয়তো সিনেমার কাজ ঠিকভাবেই এগিয়ে যেত, কিন্তু সংবাদ প্রকাশের পর সাকিবের অস্বীকৃতি গোটা প্রজেক্টকেই অন্ধকারে ঠেলে দেয়।

নির্মাতা রাজিবুল হোসেন সেই সময় চুপ করে গেলেও এতদিন পর মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, ‘এই সিনেমা আসলে থেমে যায় সাকিবের ‘না’ বলার কারণেই। তবে দোষের সব দায় কি সাকিবের একার?’

নির্মাতা জানান, সে সময় সাকিব ফুজিফিল্ম বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিলেন। ফুজির পক্ষ থেকেই সাকিবকে এই সিনেমার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। বছরের নির্দিষ্ট কিছু দিন ফুজিফিল্মের জন্য সময় দেওয়ার কথা ছিল সাকিবের।

সেই সুযোগেই সিনেমার স্পন্সরদের আহ্বানে তিনি রাজি হয়েছিলেন অভিনয়ে। এখানেই লুকিয়ে ছিল গোপন গল্পের শুরু, আর সেই গল্পটাই ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।

সিনেমার প্রথম লটে সাকিবের শুটিং হয়, ক্ল্যাপস্টিক পড়ে, ক্যামেরা চলে। নির্মাতার ভাষায়, ‘সাকিব আল হাসান সত্যিই অভিনয় করেছিলেন। প্রফেশনাল রেকর্ডিংয়ে তার দৃশ্য ধারণ করেছিলাম। কিন্তু এক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরই সাকিব নিজেই এই কাজ অস্বীকার করেন।’ এ অস্বীকৃতির পর সিনেমার স্পন্সর ফুজিফিল্মও চাপে পড়ে যায়।

ফুজিফিল্ম পরে নির্মাতাকে অনুরোধ জানায়, যেন সাকিবকে বাদ দিয়েই সিনেমাটি শেষ করেন। কিন্তু তত দিনে গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে গেছে, সিনেমার আড়ালের গল্প প্রকাশ্যে চলে এসেছে। 

পরিচালক বলেন, ‘আমি চাইলে সিনেমাটি সাকিব ছাড়া শেষ করতে পারতাম, কিন্তু অসম্পূর্ণ সত্য নিয়ে আমি কাজ করতে পারি না।’ ফলে তার এ সিদ্ধান্তেই বন্ধ হয়ে যায় ‘সবকিছু পেছন ফেলে’।

এভাবেই শুধু সিনেমা নয়, নির্মাতার স্বপ্ন, পরিশ্রম আর ৬৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ পানির মতো ভেসে যায়। কিন্তু এতদিন পর কেন মুখ খুললেন নির্মাতা? 

তার সোজা কথা, ‘অনেকে ভেবেছিল এটা হয়তো প্রোডাকশনের ব্যর্থতা, কেউ কেউ সন্দেহ করত। কিন্তু সত্যিটা ছিল অন্য। আমি শুধু চাই মানুষ জানুক কেন সিনেমাটি শেষ হলো না।’

এখন প্রশ্ন, যদি সেই সময় গণমাধ্যমে খবরটা আগেভাগে না ছড়াত, তাহলে কি বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকার সিনেমাটি আজ আমাদের চোখে পড়ত? উত্তর হয়তো ইতিহাসের পাতাতেই থেকে যাবে।