ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী সামিরা খান মাহির কাজিন আবু শাহেদ রাসেল। তবে দুর্ঘটনার চেয়েও বড় ধাক্কা এসেছে চিকিৎসা ব্যবস্থার অবহেলা থেকে- এমনটাই আক্ষেপ এই অভিনেত্রীর।
মাহির কথায়, ‘আমার ভাইটা চলে গেল, ওকে মেরে ফেলল। আর আমরা কিছুই করতে পারলাম না।’
শনিবার রাতে ফেনী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে কুমিল্লার ময়নামতি এলাকায় রাসেল দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
মাহি জানান, ‘একটি নোহা গাড়ি দুই-তিনবার ধাক্কা দিয়ে ওকে ফেলে দেয়, গাড়িটি পানিতে পড়ে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট পর দুজন মানুষ গাড়ির গ্লাস ভেঙে ওকে পানির নিচ থেকে তোলে।’
এরপর শুরু হয় হাসপাতালের অবহেলার চরম অধ্যায়। মাহির অভিযোগ, ‘হাসপাতাল ওকে ভর্তি নেয়নি। ওরা ভাবছিল, কোথাকার কে এসেছে, বিল দেবে কি না, পরিবার কারা- এসব হিসাব। একজন মানুষের জীবন তাদের কাছে মূল্যবান ছিল না।’
পরে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মাহির ভাষায়, ‘সেখানকার ব্যবস্থাপনাও ছিল সম্পূর্ণ অগোছালো। যথাযথ চিকিৎসা হয়নি।’
নিজের গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে মাহি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, প্রথমে কী আসা উচিত-একজন মানুষের জীবন, না টাকা-পয়সার হিসাব? একটা মানুষ রাস্তায় পড়ে থাকে, আর একটি গাড়িও দাঁড়ায় না-এ কেমন মানবতা? মানুষ কি সত্যিই এতটা নির্দয় হয়ে গেছে?’
তার দাবি, এই সমাজ, এই স্বাস্থ্যব্যবস্থা, এই মনুষ্যত্ব-সবই এখন প্রশ্নের মুখে। তিনি চান, ভবিষ্যতে যেন আর কারো পরিবারের সঙ্গে এমনটি না হয়।
এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী নন মাহি। তার ভাষায়, ‘কোন গাড়ি ধাক্কা দিয়েছে জানি না। পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেছে। কোন গাড়ি, কী গাড়ি কিছুই জানা নেই।’
মরদেহের পোস্টমর্টেমও করা হয়নি। পরিবারের ইচ্ছায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে রোববার রাতে।