জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থ্যানে সরব ভূমিকার জন্য আলোচিত অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন জানিয়েছেন, সমাজ এখনো তাকে ‘খারাপ মেয়ে’ বলে মনে করে। তার মতে, দেশের পক্ষে দাঁড়ানোর খেসারত তাকে আজও দিতে হচ্ছে।
একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাঁধন বলেন, ‘অনলাইনে মেয়েদের নানাভাবে হ্যারেজ করা হচ্ছে, আমিও যার শিকার। তারা মনে করে, আমি খারাপ মেয়ে, এটা ডিজার্ভ করি।’
তিনি বলেন, ‘আমি ঠোঁটকাটা, সময়ের প্রয়োজনে দেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম। বাজে ব্যাপার হচ্ছে, তারা আমাকে কোনো দলে ফেলতে পারছে না, যে কারণে সবকিছুতেই সমস্যা দেখছে।’
জুলাই বিপ্লবের পর দেশের নানা ঘটনায় হতাশ হয়েছেন বলেও জানান বাঁধন। তার ভাষায়, ‘জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থ্যানে যখন গিয়েছি, তখন একটা আশার আলো দেখেছিলাম। যারা টিভিতে সংবাদ দেখেছে, তারা বুঝতে পারবে না বাস্তবের অভিজ্ঞতাটা কেমন ছিল। ভেবেছিলাম, এবার একটা পরিবর্তন আসবে। তবে আমরা এতটাই দুর্নীতিগ্রস্থ একটা জাতি, যিনি পালিয়ে গেছেন, তার রেখে যাওয়া সেই করাপ্টেড সিস্টেম থেকে বের হতে পারিনি।’
সম্প্রতি জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ করে বাঁধন লেখেন, ‘যারা বলে জুলাই বিপ্লব ভুল ছিল, সত্যি বলতে তাদের জন্য দুঃখ হয়। ওই সময় ওই বিপ্লব একদম প্রয়োজনীয় ছিল। মানুষ যে পরিমাণ অবিচার, অন্যায় এবং দমন-পীড়নের মুখোমুখি হচ্ছিল, তা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সরকার তো একদিনে ফ্যাসিস্ট হয়ে যায়নি—ধাপে ধাপে মানুষের অধিকার আর কণ্ঠস্বর কেড়ে নিতে নিতে তারা ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠেছিল। তখন আর কোনো রাস্তা খোলা ছিল না।’
৫ আগস্টের স্মৃতি মনে করে বাঁধন বলেন, ‘যারা সেদিন, ৫ আগস্ট রাস্তায় ছিল না, তারা কোনো দিন বুঝতে পারবে না সেই আনন্দ কতটা বিশুদ্ধ ছিল—যখন সে ভীতুর মতো দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। সেই আনন্দ ছিল একদম বাস্তব এবং আমি তা নিজের প্রতিটি হৃদস্পন্দনে অনুভব করেছিলাম। ওইরকম স্বাধীনতা আর শক্তি রাস্তায় দাঁড়িয়ে একসঙ্গে অনুভব করার অভিজ্ঞতা জীবনে একবারই আসে।’
সবশেষে বাঁধন স্পষ্ট করে জানান, ‘হ্যাঁ, বিপ্লবের পরে অনেক কিছু ঘটেছে, এবং সবকিছু সুখকর হয়নি। কিন্তু এক জিনিস পরিষ্কার: জুলাই বিপ্লব সঠিক সময়ে, সঠিক কাজ ছিল।’
আপনার মতামত লিখুন :