উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় লাশ গুম ও হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে দেশজুড়ে যখন প্রশ্নের ঝড়, ঠিক তখন স্কুলের এক শিক্ষিকার বক্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাসের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান।
পূর্ণিমা দাস তার স্ট্যাটাসে দাবি করেন, ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে এবং শিক্ষকদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘হাত জোড় করে বলছি, ভুল তথ্য ছড়াবেন না। মানুষের ইমোশন নিয়ে খেলবেন না। আমরা শিক্ষক, রাজনীতিবিদ নই।’
এই বক্তব্য নিয়েই প্রশ্ন তোলেন সাদিয়া আয়মান। পূর্ণিমার স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট শেয়ার করে সাদিয়া একটি দীর্ঘ পোস্টে লেখেন, ‘উক্ত পূর্ণিমা দাসের স্ট্যাটাসটি আমাকে খুব বদার করছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, যেখানে স্কুলের হেড পিয়ন ও ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছে, স্কুল ছুটি হওয়ার কথা ছিল ১টা ৩০ মিনিটে, সেখানে ২ দিন পর এসে একজন শিক্ষক যদি বলেন ১টায় স্কুল ছুটি হয়ে গেছে, সেটি স্বভাবতই প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
সাদিয়ার প্রশ্ন আরও জোরালো হয় পূর্ণিমার আরেকটি মন্তব্য নিয়ে, যেখানে তিনি লেখেন, ‘স্কাই সেকশনে একটি বাচ্চা দাঁড়ানো ছিল।’ এই অংশটিকে ‘সিরিয়াসলি?’ বলেই প্রতিক্রিয়া জানান অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘জুনায়েত থেকে শুরু করে রাইসা মনিসহ অনেক বাচ্চা মারা গেছে, যারা স্কাই সেকশনে ছিল। ক্লাসরুমে এত বই-খাতা, ব্যাগ কোত্থেকে এলো? নিশ্চয় বলবেন না, স্টুডেন্টরা ক্লাসে বই রেখে বাসায় চলে যায়, এটাই নিয়ম!’
তিনি আরও যুক্ত করেন, শিক্ষিকার বক্তব্যের সঙ্গে নিহত শিক্ষার্থী, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বনামধন্য সংবাদমাধ্যমের তথ্যের কোনো মিল নেই। যখন গতকাল পর্যন্ত ২২ জনের মৃত্যুর কথা প্রকাশ পেয়েছে এবং চিকিৎসাধীন আরও কয়েকজন মারা গেছেন, তখন ‘কিছু’ শব্দ দিয়ে এতজনকে বোঝানো কেবল অবাস্তবই নয়, অমানবিক বলেও মনে করেন সাদিয়া।
হদিস না পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এখনও অনেক পরিবার তাদের সন্তান কিংবা অভিভাবকের সন্ধান পাচ্ছে না। স্কুল লাশ হস্তান্তর না করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকাই এখন সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে।’
সবশেষে সাদিয়া লেখেন, ‘স্কুল ১টা কিংবা ১টা ৩০ মিনিটে ছুটি হোক, তাতে নিহতের সংখ্যা কমে যাবে না। ‘কিছু’ শব্দ দিয়ে ৩০+ মৃত শিক্ষার্থীকে ব্যাখ্যা করা যায় না। ৩০+ কখনোই কিছু না!’