শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৫, ০২:১০ পিএম

কুলি থেকে কাঠমিস্ত্রি, বাস কনডাক্টর থেকে কিংবদন্তি

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৫, ০২:১০ পিএম

রজনীকান্ত। ছবি- সংগৃহীত

রজনীকান্ত। ছবি- সংগৃহীত

আজ (১২ ডিসেম্বর) ভারতের দক্ষিণী সিনেমার সুপারস্টার রজনীকান্তের ৭৫তম জন্মদিন। কেবল দক্ষিণ ভারতে নয়, সমগ্র ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের কাছে তিনি এক ‘দেবদূত’-এর মতো। সাধারণ মানুষ থেকে তিনি হয়ে উঠেছেন দক্ষিণ ভারতের কিংবদন্তি, যার প্রতি ভক্তদের উন্মাদনাও অন্যরকম। রজনীকান্ত শুধু সিনেমার নায়ক নন, বরং তার অভিনয়, স্টাইল এবং চরিত্রগুলোর জন্য একটি পূজিত প্রতীক।

রজনীকান্ত জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫০ সালে বেঙ্গালুরুর একটি সাধারণ মরাঠি পরিবারে। বাবা রামোজি রাও গাইকোয়াড ছিলেন পুলিশের কনস্টেবল, মা সংসারের কাজকর্মে ব্যস্ত। ছোটবেলায়ই বাবা অবসর নেন, এর ফলে ছয় সদস্যের পরিবারের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ে। এই কঠিন সময়ে, রজনীকান্ত ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন কাজ করে সংসার চালানোর চেষ্টা করেছিলেন– কুলি থেকে কাঠের মিস্ত্রি পর্যন্ত। পরে তিনি বেঙ্গালুরু ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসে বাস কন্ডাক্টর হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার অভিনব স্টাইল এবং যাত্রীদের বিনোদনের জন্য যাত্রীরা বিশেষ করে তার বাস ধরতে অপেক্ষা করতেন। বাসে টিকিট নেওয়ার সময় তার অনন্য ধরনই পরবর্তীতে বড় পর্দায় তার স্টাইলের ভিত্তি স্থাপন করে।

ছোটবেলায় থেকেই অভিনয়ের প্রতি রজনীকান্তের আকর্ষণ ছিল। সেই আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে তিনি বান্ধবী নির্মলার পরামর্শে মাদ্রাজ ফিল্ম ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। পরিবার আর্থিকভাবে সমর্থন না করলেও বন্ধু এবং সহকর্মী রাজ বাহাদুর সাহায্য করেন। অভিনয় কোর্স চলাকালীন, দক্ষিণী পরিচালক কে. বালাচন্দর তার দক্ষতা লক্ষ করেন। তিনি রজনীকান্তকে তামিল ভাষা শেখার পরামর্শ দেন। কয়েক দিনের মধ্যেই রজনীকান্ত তামিলে দক্ষ হয়ে যান এবং ১৯৭৫ সালে ‘অপূর্বা রাগাঙ্গাল’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন। প্রথমদিকে খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করলেও তার অভিনয় দর্শকদের মনে অম্লান ছাপ ফেলে।

রজনীকান্তের ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য চরিত্রগুলোও তাকে আইকনিক করেছে। ১৯৯১ সালে ‘থালাপতি’-তে দরিদ্র, দয়ালু এবং ন্যায়পরায়ণ সূর্যের চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯৫ সালে ‘বাশা’-তে প্রাক্তন গ্যাংস্টার মানিক বাশার চরিত্রে তিনি দুর্দান্ত অভিনয় দেখান। ২০০৭ সালে ‘শিবাজি: দ্য বস’, ২০১০ সালে ‘রোবট’, ২০১৬ সালে ‘কাবালি’, ২০১৮ সালে ‘কালা’, ২০১৪ সালে ‘লিঙ্গা’, এবং ২০২০ সালে ‘দরবার’– প্রতিটি চরিত্রেই তিনি ভক্তদের মনে অম্লান ছাপ ফেলেছেন। তার শক্তিশালী সংলাপ, অনন্য স্টাইল এবং দৃঢ় উপস্থিতি তাকে দক্ষিণ ভারতের একমাত্র ‘থালাইভার’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

রজনীকান্তের ভক্তদের উন্মাদনা সত্যিই অবাক করার মতো। ২০১৭ সালে জন্মদিনে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশের ঘোষণা না দেওয়ায় এক ভক্ত বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। আবার, ২০২১ সালে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর সুস্থ হয়ে আসার পর ভক্তরা ১০৮টি নারকেল ভেঙে তার সুস্থতা উদযাপন করেছিলেন। এমনকি থিয়েটারে গোপনে ছবি দেখতে গিয়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত এক ভক্ত শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত তার সিনেমা উপভোগ করেছিলেন।

রজনীকান্তের ব্যক্তিগত জীবনও অনুপ্রেরণীয়। বাবার অবসরের পর পরিবারের জন্য ছোটবেলায় কুলি ও কাঠের কাজ করেছেন। পরে বাস কন্ডাক্টরের কাজ, নাটকে অভিনয় এবং বন্ধুর সাহায্যে মাদ্রাজ ফিল্ম ইনস্টিটিউটে ভর্তি– সবকিছুই তার কঠোর পরিশ্রম এবং প্রতিভার প্রমাণ। প্রথম দশকে ১০০টি সিনেমায় অভিনয়, ‘বাশা’ এবং ‘থালাপতি’-র মতো হিট ছবি তাকে তামিল সিনেমার শীর্ষে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

রজনীকান্তের জীবন প্রমাণ করে, সাধারণ মানুষও যদি ধৈর্য, প্রতিভা ও আত্মবিশ্বাস রাখে, তবে সিনেমার কিংবদন্তি হতে পারে। ছোটবেলায় কুলি থেকে বড় পর্দার ‘থালাইভার’ হওয়া তার সংগ্রাম, সাফল্য এবং ভক্তদের প্রতি তার অদম্য ভালোবাসার গল্প আজও অনন্য।

Link copied!