শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম

আমাদের দেশের প্রোডাক্টকে আমরা মূল্য দেই না

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম

আমাদের দেশের প্রোডাক্টকে আমরা মূল্য দেই না

শারমিন অবনী। ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

শুরুর গল্প

২০১৩ সাল থেকে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি। তখন আমি স্টুডেন্ট, সে সময় আমাদের একটা কারখানা ছিল, সেখান থেকেই নিজের মধ্যে একটা কৌতূহল কাজ করে। মনে হলো, আমি যদি নিজেকে একটু এ বিষয়ে দক্ষ করতে পারি তাহলে হয়তো আমাদের ফ্যাক্টরিকে আরও বেশি উন্নত করতে পারব। সেখান থেকেই এ বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করি। এরপর শুরু হয় কিছু ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করা। যদিও শুরুটা হয়েছিল প্রডিউসার হিসেবে। প্রথমে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রডিউসার হিসেবে কাজ করেছি। এরপর পড়াশোনা শেষ করে যখন বুঝতে পারলাম কিছুটা দক্ষতা অর্জন করেছি, তখন থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক কাজ করছি। বর্তমানে রংধনু, পল্লি, অঞ্জনস, লারিভসহ বিভিন্ন নামিদামি ফ্যাশন হাউসগুলোয় আমার ডিজাইনগুলো যাচ্ছে।

প্রাপ্তি

প্রত্যেকটা সফলতাই এক একটা প্রাপ্তি, তবে এত দিন ধরে কাজ করার মধ্য দিয়ে আমার উল্লেখযোগ্য প্রোডাক্টের মধ্যে কুর্তি বা ওয়ান পিস খুব বেশি জনপ্রিয় হয়েছে এটা আমার একটা বড় প্রাপ্তি। এ ছাড়া মসলিন সিল্কের শাড়ির কাজের জন্য আমি একবার সম্মাননা পেয়েছি।

দেশীয় কাপড়ের ভ্যালু

কাপড়ের জগতে দেশীয় কাপড়ের ভ্যালু সবসময় যেমন ছিল তেমনই থাকবে আশা করা যায়। কারণ, আমাদের দেশে তাঁত থেকে বোনা, যেমন- খাদি, মসলিন সিল্ক ইত্যাদি কাপড়ের চাহিদা কখনোই কমবে না; আগেও যেমন ছিল ভবিষ্যতে তেমনই থাকবে। যদিও এখন সিল্কের মধ্যে অনেক ভ্যারিয়েশন চলে এসেছে তবে অরজিনাল মসলিন সিল্ক এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজশাহী-চাঁপাই ছাড়া কোথাও পাওয়া যায় না। দেশের বাইরে থেকে কিছু আসে, কিন্তু সেগুলোকে সম্পূর্ণভাবে সিল্ক বলা যায় না! তাই সেদিক থেকে চিন্তা করলে বলা যায়, অবশ্যই আমাদের দেশের সিল্ক, টাঙ্গাইলের খদ্দর বা তাঁতের শাড়ির ভ্যালু সবসময়ই থাকবে।

ফ্যাশন ডিজাইনে সম্ভাবনা

ফ্যাশন ডিজাইন এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে অন্বেষণ ও নতুনত্বের কোনো সীমা নেই। ফ্যাশন ডিজাইনারদের হাত দিয়ে তৈরি পোশাক, অ্যাকসেসরিজ এবং শৈলী আজকে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানেই জনপ্রিয়। আর এ শিল্পের সম্ভাবনাও দিন দিন বাড়ছে। সত্যি বলতে গেলে, আমাদের দেশের প্রোডাক্টকে আমরা মূল্য দেই না। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের ফেব্রিকের চাহিদা অনেক। আমি একসময় এক্সপোর্ট ইমপোর্টে যুক্ত ছিলাম, তখন যেটা হতো, আমাদের থেকে ফেব্রিক নিয়ে ইউ এস এ, জাপানে তারা ব্লেজার, ওয়েস্টার্ন গাউন ইত্যাদি বানিয়ে আন্তর্জাতিক মার্কেটে বেশ সুনামের সঙ্গে বিক্রি করত। তাদের ওখানে আমাদের ফেব্রিকের চাহিদা অনেক বেশি।

ফ্যাশন ডিজাইনার শারমিন অবনী। ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

শুরু করার উপায়

ফ্যাশন ডিজাইনে আসতে হলে সবার আগে একাডেমিক এবং কারিগরি দক্ষতা অর্জন করা জরুরি। অনেকেই মনে করে, একটা ফেব্রিক কিনে সেখানে সামান্য লেছ যুক্ত করলেই ডিজাইনার হয়ে ওঠা যায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এভাবে আসলে নিজেকে এবং দেশীয় ডিজাইনারদের ছোট করা হয়। তাই আমি বলব ফ্যাশন ডিজাইনে আসার আগে কিছু ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করে তাদের উদ্দেশ্য, চিন্তা-ভাবনা এবং তারা কীভাবে কাজ করে সে বিষয়গুলো জানতে হবে। এ ক্ষেত্রে হয়তো অনেক ব্র্যান্ড শুরুতে টাকা-পয়সা দিয়ে কাজ দেবে না। তবে আগ্রহীরা বিনা মূল্যে মাস ছয়েক কাজ করলে যে দক্ষতাটা আসবে ক্যারিয়ারে তার প্রয়োজনীয়তা অনেক। হয়তো শুরুতে আপনি কোনো টাকা-পয়সা পাচ্ছেন না, কিন্তু এই শ্রমটার বিনিময়ে আপনি খুব ভালো একটা জায়গায় পৌঁছাতে পারবেন। প্রথমে  বিনা মূল্যে কাজ করতে যেয়ে, কী করছি! কী হবে! এরকম চিন্তাভাবনা করা যাবে না। কারণ এ ছয় মাস আপনাকে অভিজ্ঞ করে তুলবে এবং কাঙ্খিত লক্ষ্যের কাছে নিয়ে যাবে। এ ছাড়া ফ্যাশন ডিজাইন শুরু করতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ যেতে পারে। যেমন- ফ্যাশন ডিজাইন সম্পর্কে জানা: ফ্যাশন ডিজাইন কী এবং এর ইতিহাস জানার জন্য বিভিন্ন বই, আর্টিকেল এবং ডকুমেন্টারি দেখুন। ডিজাইনের বিভিন্ন শাখা, যেমন পোশাক ডিজাইন, অ্যাকসেসরি ডিজাইন ইত্যাদি সম্পর্কে জানুন।

শিক্ষা গ্রহণ

ফ্যাশন ডিজাইনের জন্য কোনো ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কোর্স বা ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকেও ডিজাইন শেখা সম্ভব।

কৃতিত্ব ও দক্ষতা তৈরি করুন

ডিজাইনিংয়ের জন্য আঁকার দক্ষতা এবং বিভিন্ন উপকরণ সম্পর্কে জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজে থেকেই আঁকতে, কাটছাঁট করতে এবং সেলাই করার দক্ষতা অর্জন করুন।

মার্কেট রিসার্চ করুন

আপনি যে ধরনের পোশাক ডিজাইন করতে চান, তার জন্য মার্কেট রিসার্চ করতে হবে। বর্তমান ট্রেন্ড, গ্রাহকের চাহিদা এবং প্রতিযোগীদের পণ্য সম্পর্কে জানলে কাজের ক্ষেত্রে সহজ হবে।

প্রথম ডিজাইন তৈরি করুন

প্রাথমিকভাবে কিছু সহজ ডিজাইন তৈরি করে, সেগুলোর পরীক্ষা করুন। প্রটোটাইপ তৈরি করতে সেলাই বা অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করুন।

পোর্টফোলিও তৈরি করুন

নিজের ডিজাইনগুলো একত্র করে একটি পোর্টফোলিও তৈরি করুন। এটি আপনার দক্ষতা প্রদর্শন করবে এবং ক্লায়েন্ট বা প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রেজেন্টেশন সহজ করবে।

নেটওয়ার্কিং এবং ব্র্যান্ডিং

ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করার জন্য বিভিন্ন ফ্যাশন শো, সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং গ্রাহক সম্পর্কের মাধ্যমে নিজেকে পরিচিত করুন।

 

শারমিন অবনী

ফ্যাশন ডিজাইনার, ফাউন্ডার এডর্নেড এটায়ার্স

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!