ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

কাঁচা আম খাওয়ার উপকারিতা

ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২৫, ০৩:০১ পিএম
পুষ্টিকর ফল কাঁচা আম। ছবি: সংগৃহীত

বাইরে এখন বৈশাখ মাসের তীব্র রোদ আর গা-পোড়ানো গরম। শরীর যখন ক্লান্তিতে নুইয়ে পড়ে, তখন এক গ্লাস কাঁচা আমের ঠান্ডা শরবত যেন স্বস্তির জাদুমন্ত্র! বাজারেও এখন মিলছে টাটকা কাঁচা আম, দামটাও নাগালের মধ্যে। তাহলে আর দেরি কিসের?

চলুন জেনে নিই কাঁচা আম আমাদের শরীর আর ত্বকের জন্য কতটা উপকারী-

কাঁচা আমের পুষ্টিগুণ

পুষ্টিবিদদের মতে, কাঁচা বা পাকা দুই ধরনের আমই শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এমনকি, আম কাঁচা বা পাকা যে অবস্থায়ই থাকুক না কেন, শরীরের জন্য এর কোনো নেতিবাচক দিক নেই বললেই চলে।

কাঁচা আমের গুণ প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদেরা বলেন, ১০০ গ্রাম কাঁচা আমে পটাশিয়াম থাকে ৪৪ ক্যালরি। এ ছাড়া ৫৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ও ২৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম থাকে। 

কাঁচা আম বা আমের রসে পটাশিয়াম থাকায় প্রচণ্ড গরমে তা তীব্র গরমেও শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে।

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের কাজ করে। তাই বয়স ধরে রাখতে কাঁচা আম খেতে পারেন।

কাঁচা আম একটি ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ফল , যা শ্বেত রক্তকণিকার কার্যকারিতা বাড়ায়, পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। কাঁচা আমে থাকা বিটা ক্যারোটিন হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর কাঁচা আম ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। লুটেইন ও জিয়াজ্যান্থিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের রেটিনা ভালো রাখে। আর এসব উপাদানও পেয়ে যাবেন কাঁচা আমে।

কাঁচা আমের অজানা ৯টি গুণ জানেন কি? - Shajgoj

কাঁচা আমের ১২টি দারুণ উপকারিতা:

১. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে

কাঁচা আমে চিনির পরিমাণ কম, তাই ক্যালোরিও কম। যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য কাঁচা আম একেবারে পারফেক্ট।

২. বুক জ্বালাপোড়া কমায়

অম্লতা বা এসিডিটির সমস্যায় কাঁচা আম হতে পারে প্রাকৃতিক রিলিফ!

৩. সকালের বমিভাব দূর করে

যাদের হজমে সমস্যা, সকালে উঠে বমি বমি ভাব হয়—তারা কাঁচা আম ট্রাই করতে পারেন।

৪. ক্লান্তি দূর করে

গরমে ক্লান্ত লাগা স্বাভাবিক। কাঁচা আম একটি শক্তিবর্ধক ফল, যা শরীরকে চনমনে রাখে।

৫. যকৃত ভালো রাখে

পিত্তরস বাড়ায়, অন্ত্রের জীবাণু দূর করে—যার ফলে যকৃতের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

৬. রক্তস্বল্পতা দূর করে

কাঁচা আমে থাকা আয়রন রক্তের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে।

৭. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

ফাইবারসমৃদ্ধ ফল হওয়ায় কাঁচা আম হজমে সাহায্য করে, অন্ত্র পরিষ্কার রাখে।

৮. শরীরে লবণের ঘাটতি পূরণ করে

তীব্র গরমে ঘামের মাধ্যমে যেসব খনিজ বের হয়ে যায়, কাঁচা আমের শরবত তা পূরণ করতে পারে।

৯. স্কার্ভি ও মাড়ির রক্ত পড়া বন্ধ করে

ভিটামিন সি স্কার্ভি প্রতিরোধে সহায়ক। দাঁতের জন্যও ভালো। কাঁচা আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি।

১০. চুল ও ত্বকে উজ্জ্বলতা আনে

কাঁচা আমে আছে আয়রন, যা রক্তস্বল্পতার সমস্যা সমাধানে বেশ উপকারী।

আয়রনসমৃদ্ধ খাবার চুল এবং ত্বকের জন্য খুব উপকারী। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে ত্বক ও চুল পায় এক নতুন জেল্লা।

১১. হজমে সহায়ক

কাঁচা আমে থাকা গ্যালিক অ্যাসিড হজম প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে। বদ হজমে 

১২. ঘামাচি থেকে মুক্তি দেয়

কাঁচা আমের কিছু উপাদান ঘামাচি প্রতিরোধেও কাজ করে।

সতর্কতা

কোনো খাবার যত উপকারীই হোক না কেন তা অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। সেক্ষেত্রে উপকারের বদলে ক্ষতির পাল্লাটাই ভারী হয়।

অনেকেই কাঁচা আমের টক ভাব কমানোর জন্য চিনি, লবণ ও ঝাল যোগ করেন। এভাবে কাঁচা আম খাওয়ার ফলে অতিরিক্ত চিনি ও লবণ খাওয়া হয়, যা শরীরের জন্য মোটেই ভালো নয়।

আমের মধ্যে ইউরিশিয়াল নামক একটি রাসায়নিক থাকে। এ কারণে মাত্রাতিরিক্ত আম খেলে মানব শরীরে অ্যালার্জি ও পেট ফাঁপা সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।