/feature-news/46856 পাকা কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা
রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৫, ০২:১২ পিএম

পাকা কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৫, ০২:১২ পিএম

পাকা কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা

জাতীয় ফল কাঁঠাল। ছবি : সংগৃহীত

কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল এবং একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় মৌসুমি ফল। মিষ্টি স্বাদ ও অনন্য গন্ধের জন্য পাকা কাঁঠাল শুধু রসনাতৃপ্তিই নয়, বরং স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও বহুমাত্রিক উপকার করে। তবে এই ফলের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। এ প্রবন্ধে আমরা কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা ছাড়াও এর বীজ, পাতা, গাছ এবং গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খাওয়া সংক্রান্ত দিকগুলো বিশ্লেষণ করব।

কাঁঠালের বৈজ্ঞানিক পরিচয় ও গাছের বৈশিষ্ট্য

কাঁঠালের বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus heterophyllus। এটি Moraceae গোত্রভুক্ত এবং গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে জন্মে। কাঁঠাল গাছ সাধারণত ৩০ থেকে ৭০ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। পাতাগুলো সবুজ ও চামড়ার মতো শক্ত, যা অনেক ওষুধি গুণসম্পন্ন। গাছের গুঁড়ি সোজা ও মজবুত। একটি পরিপক্ব গাছে বছরে গড়ে ৫০-১০০টি কাঁঠাল উৎপন্ন হয়।

কাঁঠাল কোন ঋতুতে হয়?

বাংলাদেশে সাধারণত বৈশাখ থেকে শ্রাবণ (এপ্রিল থেকে জুলাই) মাস পর্যন্ত কাঁঠালের মৌসুম চলে। এই সময়ে গাছের ফল পাকতে শুরু করে এবং বাজারে কাঁঠালের সরবরাহ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে।

পাকা কাঁঠালের উপকারিতা

পাচন প্রক্রিয়া উন্নত করে: ফাইবার বা আঁশ থাকার কারণে কাঁঠাল হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: এতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়: এতে থাকা ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী।

হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক: কাঁঠালে পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হার্ট ভালো থাকে।

ত্বকের জন্য উপকারী: কাঁঠালের বেটা-ক্যারোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বক উজ্জ্বল রাখে।

কাঁঠালের অপকারিতা কী কী?

যদিও কাঁঠাল উপকারী ফল, তবে অতিরিক্ত খেলে কিছু অপকারিতা হতে পারে। 

রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়: এতে প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুকটোজ) বেশি থাকায় ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। 

হজমে সমস্যা হতে পারে: অতিরিক্ত খেলে গ্যাস, ফোলাভাব, বদহজমের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া: অনেকের শরীরে কাঁঠালে থাকা প্রোটিনে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেমন চুলকানি বা ত্বকে র‍্যাশ।

পাকা কাঁঠাল কি কিডনির জন্য ভালো?

কাঁঠালে উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা পরোক্ষভাবে কিডনির জন্য ভালো। তবে কিডনির রোগীদের ক্ষেত্রে বেশি পটাশিয়াম ক্ষতিকর হতে পারে। তাই যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে, তাদের কাঁঠাল খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কাঁঠাল খাওয়ার পর কোন খাবার খাওয়া উচিত নয়?

কাঁঠাল খাওয়ার পর কিছু নির্দিষ্ট খাবার একসঙ্গে খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে।

দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার: কাঁঠালের সঙ্গে দুধ খেলে অনেকের পেটে গ্যাস বা অস্বস্তি হতে পারে। 

ফার্মেন্টেড বা অতিঝাল খাবার: এটি পেটে গরম ভাব সৃষ্টি করতে পারে, যা হজমের অসুবিধা বাড়ায়। 

ঠান্ডা পানি বা আইসক্রিম: কাঁঠাল গরম প্রকৃতির ফল হওয়ায় ঠান্ডা পানীয় একসঙ্গে খেলে শরীরে জ্বালাভাব হতে পারে।

কাঁঠালের বিচিতে কী আছে?

কাঁঠালের বীজ বা বিচিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন বি, জিঙ্ক ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এটি রান্না করে বা ভেজে খাওয়া যায়। পুষ্টিগুণের দিক থেকে এটি অনেকটা বাদামের মতো।

কাঁঠালের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা

উপকারিতা: হজমশক্তি বাড়ায় ও পেট পরিষ্কার রাখে। চুল পড়া রোধ করে এবং চুল মজবুত করে। রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

অপকারিতা: কাঁচা বিচি না রান্না করে খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত খেলে গ্যাস বা ডায়রিয়া হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা

ফোলেট সরবরাহ করে: শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

আয়রন ও ক্যালসিয়াম: রক্তশূন্যতা রোধে ও হাড় মজবুত রাখতে সহায়তা করে।

তবে গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত এবং পূর্ববর্তী কোন স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।

কাঁঠাল পাতার উপকারিতা

কাঁঠাল গাছের পাতা অনেক ওষুধি গুণে পরিপূর্ণ। প্রাচীন আয়ুর্বেদ ও লোকজ চিকিৎসায় এর ব্যবহার দেখা যায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: শুকনো পাতা গুঁড়ো করে খেলে রক্তে গ্লুকোজ কমতে সাহায্য করে।

ঘা ও ক্ষত নিরাময়ে: পাতা পেস্ট করে ক্ষতস্থানে দিলে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে: কাঁঠাল পাতার রস দিয়ে কুলকুচি করলে মুখের দুর্গন্ধ কমে।

পাকা কাঁঠাল স্বাদ ও পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে খেলে এটি শরীরের জন্য উপকারী হলেও অতিরিক্ত খাওয়ায় হতে পারে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশেষত ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা ও গর্ভাবস্থায় কাঁঠাল খাওয়ার আগে অবশ্যই সচেতনতা জরুরি। কাঁঠালের বিচি ও পাতা পর্যন্ত আমাদের দৈনন্দিন স্বাস্থ্য রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারে। তাই মৌসুমি এই ফলের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে জেনে বুঝে খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

Link copied!