ব্যাংকার, বর্তমান বাজারে লোভনীয় একটি পেশা। চাকরির বাজারের ব্যাংকের রয়েছে বড় ক্ষেত্র। এ পেশায় যেমন রয়েছে সম্মান; তেমনি রয়েছে ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা। রয়েছে উপযুক্ত সম্মানী ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা। রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে একটি বেসরকারি ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, কীভাবে ব্যাংকিংকে পেশা হিসেবে নেওয়া যেতে পারে।
স্বাধীনতার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক, বেসরকারি বাণিজ্যিক, বিশেষায়িত ও বিদেশিসহ বাংলাদেশে তালিকাভুক্ত ব্যাংক রয়েছে ৬১টি। অনেক প্রাইভেট ব্যাংকের আগমনে এ সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। প্রত্যেক বছরই ব্যাংকগুলো শাখা বাড়াচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। এ সেক্টরে অনেক সুযোগ-সুবিধা, ভালো বেতন আর চাকরির নিরাপত্তা থাকায় বিশ্বায়নের যুগে স্মার্ট ক্যারিয়ারের বড় সুযোগ হয়ে উঠেছে ব্যাংক। এ প্রসঙ্গে ব্যাংকার মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর যেকোনো দেশেই ব্যাংকিং পেশাকে হোয়াইট কলার জব ধরা হয়। এ পেশার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। যারা পরিশ্রমী, ক্যারিয়ারের স্বপ্ন, নিজেদের একটা ভালো পজিশনে দেখতে চায়; তাদের জন্য ব্যাংকিং ক্ষেত্র চমৎকার পেশা। ব্যাংকে চাকরি করতে হলে শুরুতেই লেখাপড়ার পাশাপাশি মেধা যাচাই অর্থাৎ নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য নিজেকে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করতে হবে। ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রিজ সম্পর্কে সঠিকভাবে পুরোপুরি জ্ঞান অর্জন করতে হবে। চাকরি পাওয়ার পর একজন কর্মকর্তার দায়িত্ব বা করণীয় কী হতে পারে, সেই বিষয়ে তাকে ধারণা রাখতে হবে। পদবি অনুযায়ী যেকোনো বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার পর ব্যাংকের চাকরিতে আবেদন করা যায়। তবে বিভিন্ন ব্যাংকে ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন পদের জন্য বিশেষ বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষাগুলো ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন টেস্টের আদলে হয়ে থাকে। বাংলা, গণিত, ইংরেজি, বিশ্লেষণধর্মী বা অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটি, সাধারণ জ্ঞান থেকে প্রশ্ন হয়ে থাকে। যেন যেকোনো বিষয় থেকে পড়াশোনা করা প্রার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারেন। অন্যদিকে মৌখিক পরীক্ষাতে সাধারণত নিজের পড়াশোনা এবং সেই সম্পর্কিত প্রশ্ন, দেশ এবং অর্থনীতি, সাধারণ জ্ঞান, সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সব প্রশ্ন করা হয়’।
মো. ছিদ্দিকুর রহমানের ভাষায়, ব্যাংকে মূলত চার ধরনের কাজ হয়। ১. ক্যাশ : টাকা জমা ও উত্তোলন, ২. জেনারেল ব্যাংকিং: অ্যাকাউন্ট ওপেনিং, ডিপিএস, ফিক্সড ডিপোজিট, গ্রাহক অনুসন্ধান, চেক নিকাশ ইত্যাদি, ৩. ক্রেডিট: লোন সংক্রান্ত সব কাজ, ৪. ফরেন ট্রেড: আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কাজ।
সফল এই ব্যাংকার বলেন, ‘ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে মূল বেতনের পাশাপাশি আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যেমন প্রত্যেক কর্মদিবসে খাবারের জন্য ভাতা, বছরে দুটি আনুষ্ঠানিক ভাতা, লভ্যাংশে বোনাস বছরে প্রায় দুই-তিনটি, চাকরিজীবী ঋণ, কম্পিউটার ঋণ, ঘরবাড়ি তৈরির ঋণ ইত্যাদি। সুযোগ-সুবিধা ব্যাংকে বেশি থাকায় এখন অনেকেই এ পেশাকে ক্যারিয়ার জন্য বেছে নিচ্ছে’।

ব্যাংকিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চাইলে আপনিও নিজেকে তৈরি করতে পারেন এখন থেকেই। কারণ ব্যাংকে যোগ দেওয়ার আগেই যদি আপনার সঠিক জ্ঞান থাকে, তাহলে সফলতার মুখ দেখতে বেশি সময় লাগবে না।
আপনার মতামত লিখুন :