অগ্নিকাণ্ড এখন প্রায় দৈনন্দিন খবর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশিরভাগ সময় অসতর্কতা, সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ না থাকা বা নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবে আগুন লাগে। এতে মানুষের প্রাণহানি হয় এবং সম্পদেরও বড় ক্ষতি হয়।
তবে কিছু সচেতনতা ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করলে আগুন লাগা অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। আধুনিক প্রযুক্তি এখন অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে খুবই সাহায্য করছে। অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে পাঁচটি জনপ্রিয় প্রযুক্তি সস্পর্কে জেনে নিন-
ইনটিউমেসেন্ট কোটিংস: এটি একটি বিশেষ ধরনের রঙ। আগুনের তাপ লাগলে এটি ফুলে যায় এবং একটি ঘন, সুরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে। এতে স্টিলের কাঠামো গলে পড়ে না এবং ভবনের গঠন অনেকক্ষণ অক্ষত থাকে। ফলে মানুষ নিরাপদে বাইরে যেতে পারে এবং উদ্ধারকাজ সহজ হয়। এটি হালকা, সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং দীর্ঘস্থায়ী।
স্মার্ট ফায়ার ডিটেকশন সিস্টেম: এটি আধুনিক অগ্নি শনাক্তকরণ ব্যবস্থা। এটি শুধু ধোঁয়া বা তাপ দেখেই নয় বরং বিশ্লেষণ করতে পারে আগুন সত্যি নাকি রান্নার ধোঁয়া। এতে ভুয়া অ্যালার্ম কমে এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা কমে যায়। এটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দূর থেকে নজরদারি করা যায় এবং ভবনের দরজা বা বাতাসের ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ওয়্যারলেস ফায়ার সাপ্রেশন সিস্টেম: এটি আগুন নেভানোর এক আধুনিক ব্যবস্থা যা তার ছাড়া কাজ করে - রেডিও সিগন্যালের মাধ্যমে ডিভাইস চালু হয়। ফলে এটি দ্রুত ইনস্টল করা যায় এবং দুর্গম বা পুরনো ভবনে সহজে ব্যবহার করা যায় ও রিয়েল-টাইমে নজরদারি করা যায়। বড় সার্ভার রুম বা ডেটা সেন্টারে যেমন গুগলের সার্ভার স্থাপনায় এটি ব্যবহার করা হয়, যাতে পানি দিয়ে যন্ত্রের ক্ষতি না হয়।
ফায়ারস্টপ পণ্য ও সমাধান: ফায়ারস্টপ হল এমন সামগ্রী যা দেয়াল, মেঝে বা ছাদের ফাঁক দিয়ে আগুন বা ধোঁয়া ছড়াতে দেয় না। আধুনিক ফায়ারস্টপে ইনটিউমেসেন্ট সিল্যান্ট, ফায়ারস্টপ কলার ও তাপ-সহনশীল সামগ্রী ব্যবহৃত হয়। এটি ভবনের ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়া কমিয়ে দেয় এবং ক্ষতি প্রায় ৪০ শতাংশ কমাতে পারে। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক হাসপাতাল এটি ব্যবহার করছে।
ক্লিন এজেন্ট ফায়ার সাপ্রেশন সিস্টেম: এটি আগুন নেভানোর একটি আধুনিক পদ্ধতি। পানি বা স্প্রিংকলার ব্যবহার না করে বিশেষ গ্যাস বা রাসায়নিক দিয়ে আগুন দ্রুত নেভায়। এতে যন্ত্রপাতি বা গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামের ক্ষতি হয় না। সার্ভার রুম, ডেটা সেন্টার বা সংবেদনশীল ইলেকট্রনিক স্থাপনার জন্য এটি উপযুক্ত। এটি পরিবেশবান্ধব, কম বিষাক্ত এবং জনবসতিতে নিরাপদ।
তথ্যসূত্র: এনএফপিএ, ফায়ার সেইফটি জার্ণাল, গুগল ডেটা সেন্টার কেস স্টাডি, হেলথকেয়ার ডিজাইন ম্যাগাজিন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন