শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা যখন নিরীহ বস্তু যেমন ধুলাবালি, পরাগকণা, পশুর লোম বা নির্দিষ্ট খাবারকে ‘শত্রু’ হিসেবে ভুল করে চিহ্নিত করে, তখনই অ্যালার্জি দেখা দেয়। এ ধরনের প্রতিক্রিয়ার প্রধান কারণ হলো হিস্টামিন নামক রাসায়নিক পদার্থ। এই হরমোনের প্রভাব কমিয়ে দিয়ে অ্যালার্জির লক্ষণ উপশমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ক্লোরফেনিরামিন। এটি একটি বহুল ব্যবহৃত ও নিরাপদ অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ, যা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে বাজারজাত হয়ে থাকে।
ক্লোরফেনিরামিনের উপকারিতা
অ্যালার্জিজনিত উপসর্গের দ্রুত উপশম
হাঁচি, গলা বা নাক চুলকানো, চোখ লাল হওয়া বা পানি পড়া—এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে ক্লোরফেনিরামিন তা দ্রুত প্রশমিত করতে সাহায্য করে।
সিজনাল অ্যালার্জিতে কার্যকর
বসন্ত বা শীতকালে বাতাসে থাকা পরাগকণা বা ধুলোর কারণে যাঁরা অ্যালার্জিতে ভোগেন, তাঁদের জন্য ক্লোরফেনিরামিন এক পরীক্ষিত সমাধান।
চর্মরোগ ও চুলকানিতে সহায়ক
ডার্মাটাইটিস, একজিমা, হাইভস বা বিভিন্ন অ্যালার্জিক র্যাশ—সবচেয়ে বিরক্তিকর উপসর্গ হলো চুলকানি। ক্লোরফেনিরামিন তা কমিয়ে দেয় এবং ত্বককে প্রশান্ত রাখে।
সাধারণ সর্দি-কাশির উপশমে সহায়ক
সাধারণ ঠান্ডা বা ভাইরাল ইনফেকশনের কারণে যদি নাক দিয়ে পানি পড়ে, হাঁচি হতে থাকে বা গলা চুলকায়, তখন ক্লোরফেনিরামিন দ্রুত উপকার দেয়।
পোকামাকড়ের কামড় বা বিষক্রিয়ায় উপকারী
মৌমাছি, মশা বা বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড়ে অনেক সময় ত্বকে অ্যালার্জি দেখা দেয়। ক্লোরফেনিরামিন সেই অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া প্রশমিত করতে সহায়তা করে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সতর্কতা
যদিও ক্লোরফেনিরামিন বেশিরভাগ মানুষের জন্য নিরাপদ, তবে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন:
১/ ঘুম ঘুম ভাব বা ঝিমুনি
২/ মুখ শুকিয়ে যাওয়া
৩/ চোখে ঝাপসা দেখা
৪/ শিশুদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চঞ্চলতা
বিশেষ পরামর্শ
গাড়ি চালানোর আগে বা মনোযোগ প্রয়োজন এমন কোনো কাজ করার সময় ওষুধটি গ্রহণ করা ঠিক নয়। গর্ভবতী নারী বা শিশুদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার অনুচিত।