সুস্থ থাকার জন্য ডাক্তারগণ প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন। তেমনি এক উপকারী শাক হলো কচু শাক। কচু শাকের উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ প্রচুর। কচু শাকের পুষ্টিগুণ বেশি থাকায় এর চাহিদাও ব্যপক। কচু শাক নানা ভাবে খাওয়া যায়।
কচুশাকে আছে উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম, তাই হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। শরীরের রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমলে ডাক্তার কচু শাক খাওয়ার পরামর্শ দেন। এই শাকে ভিটামিন এ-এর পাশাপাশি আছে ভিটামিন বি এবং সি ও কচুশাক আয়রনসমৃদ্ধ বলে এর কদর বেশি। এইশাক ভিটামিন এ-এর ভালো উত্স, রাতাকানা রোগসহ ভিটামিন এ-এর অভাবে হওয়া সব ধরনের রোগ প্রতিরোধে কচু শাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

শুধু কচু শাকই দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদার অনেকটা পূরণ করতে সক্ষম।
পুষ্টিগুণ-
কচুশাকের পুষ্টি উপাদান বেশি থাকায় সব বয়সের মানুষ খেতে পারে। এই শাকে আছে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান।
কচু শাকের পুষ্টি উপাদান দেয়া হলো-
প্রতি ১০০ গ্রাম কচুশাকে থাকে, শর্করা-৬.৮ গ্রাম, প্রোটিন- ৩.৯ গ্রাম, লৌহ-১০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন)-০.২২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২ (রাইবোফ্লেবিন)-০.২৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন ‘সি’-১২ মিলিগ্রাম, স্নেহ বা চর্বি-১.৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ২২৭ মিলিগ্রাম, খাদ্যশক্তি-৫৬ কিলোক্যালরি।
কোষ্ঠকাঠিন্য
কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে যা খাবারকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে থাকে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, তাঁরা কচুশাক খেতে পারেন।
রাতাকানা রোগ
কচুশাক ভিটামিন এ-এর খুব ভালো উত্স, রাতাকানা রোগসহ ভিটামিন এ-এর অভাবে হওয়া সকল ধরনের রোগ প্রতিরোধে কচুশাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ কারণে এটি দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া চোখ সম্পর্কিত জটিলতা কমায় ও নানান সমস্যা সমাধান করে।

হিমোগ্লোবিন
আমাদের শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ সচল রাখতে কচু শাক অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়া কচুশাক আয়রনসমৃদ্ধ বলে এর সমাদর অনেক বেশি। আমাদের শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে সব ডাক্তাররাই কচু শাক খাওয়ার পরামর্শ দেন।
মুখ ও ত্বকের রোগ
ভিটামিন এ-এর পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন বি এবং সি-ও। তাই মুখ ও ত্বকের রোগ প্রতিরোধেও কচুশাক সমান ভূমিকা রাখে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ
এছাড়াও এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত কচু শাক খেলে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
দাঁত ও হাড়ের গঠন
কচু শাকের সব চেয়ে বড় উপকারিতা হল এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাংগানিজ ও ফসফরাস। আমাদের দাঁত ও হাড়ের গঠনে এবং ক্ষয়রোগ প্রতিরোধে কচু শাকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হৃদরোগ ও স্ট্রোক
এতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, তাই হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমায়। আসুন আমরা জেনে নেই কচু শাক এর উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণের কথা।
উচ্চ রক্তচাপ কমায়
কচু শাকে থাকা স্যাপোনিনস, টেনিনস, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্লাভোনয়েড উচ্চ রক্তচাপ কমায়। নিয়মিত কচু শাক খেলে হৃদরোগের ঝুঁকিও অনেক কমে যায়।
গর্ভবতী নারী
কচু শাকে বিদ্যমান নানা রকমের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান গর্ভবর্তী মা ও শিশুর জন্য অনেক উপকারী। কচু শাক সহজ লভ্য তাই দরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী মহিলারা ভিটামিন ও আয়রনের চাহিদা পূরণের জন্য কচু বা কচুশাক খেতে পারেন।
জ্বর কমাতে
জ্বরের সময় রোগীকে দুধ কচু রান্না করে খাওয়ালে জ্বর দ্রুত ভাল হয়।
অপকারিতা
কচু শাকের অপকারিতা কিছু পরিমানে আছে। কচু শাক বা কচু খেলে অনেক সময় গলা চুলকায়। কারণ এতে অক্সলেট নামক একটি উপাদান আছে। এই জন্য কচু রান্না করার সময় লেবুর রস বা সিরকা ব্যবহার করুন।
তবে যাদের শরীরে অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের কচু বা কচু শাক না খাওয়াই উচিত।
আপনার মতামত লিখুন :