সবচেয়ে পরিচিত শাকের একটি হলো কলমি। এটি নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে অন্যান্য শাকের ভিড়ে এই শাক খুব একটা কদর পায় না। অবহেলিত এই শাকই আপনার শরীরের নানা উপকার করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কলমি শাকে থাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন ও অন্যান্য জরুরি কিছু উপাদান। যে কারণে এই শাক খেলে অনেক রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয়। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কলমি শাকের উপকারিতা-
পুষ্টিগুণ (প্রতি ১০০ গ্রাম):
ক্যালরি: ২০–২৫ কিলোক্যালরি
আয়রন: ১.৭–২.৬ মি.গ্রা.
ক্যালসিয়াম: ৭০–৮০ মি.গ্রা.
ভিটামিন এ, সি, এবং কিছু পরিমাণে বি কমপ্লেক্স
খাদ্যআঁশ: ২–৩ গ্রাম

কলমি শাকের উপকারিতা
হজমে সহায়ক
কলমি শাকের আঁশ হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
রক্তশূন্যতা (অ্যানিমিয়া) দূর করে
এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহায়ক। বিশেষ করে গর্ভবতী ও রজঃস্রাবজনিত রক্তশূন্যতায় উপকারী।
চোখের জন্য ভালো
এতে থাকা ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। চোখের শুষ্কতা ও রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে বলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
লিভার ও কিডনির জন্য উপকারী
কলমি শাকের প্রাকৃতিক ডিটক্সিফাইং গুণ আছে, যা লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে এটি কিডনি পরিষ্কারে সহায়ক হতে পারে।
চর্মরোগে উপকারী
এটি ত্বকের প্রদাহ, চুলকানি ও ফুসকুড়ি দূর করতে সাহায্য করে। পাতা বেটে ত্বকে লাগালে উপশম পাওয়া যেতে পারে।
নিদ্রাহীনতা ও মানসিক প্রশান্তি
আয়ুর্বেদ মতে, কলমি শাক স্নায়ুর উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক।
সতর্কতা
অতিরিক্ত খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে (যেমন: ঢেঁকুর, হালকা গ্যাস্ট্রিক)। কলমি শাক জলাশয় বা দুষিত পানিতে জন্মালে ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী বহন করতে পারে। তাই ভালোভাবে ধুয়ে রান্না করা জরুরি। থাইরয়েড সমস্যা থাকলে নিয়মিত বেশি খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
কলমি শাক একটি সস্তা, সহজলভ্য এবং পুষ্টিকর শাক, যা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। সঠিকভাবে ধুয়ে রান্না করে নিয়মিত খেলে এটি শরীরের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনে।
আপনার মতামত লিখুন :