তেতুল আমাদের দেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি ফল।স্বাদের জন্য ছোট-বড় সবাই এটি পছন্দ করে। তবে অনেকেই জানেন না, তেতুলের মধ্যে রয়েছে অসাধারণ ভেষজ ও পুষ্টিগুণ, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি শুধু খাবারের স্বাদ বাড়াতেই নয়, বরং হজম শক্তি বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ, ত্বকের যত্নসহ নানা সমস্যায় কার্যকর।
হজমে সহায়ক
তেতুলের সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো এটি হজম শক্তি বাড়ায়। এতে থাকা টারটারিক অ্যাসিড ও অন্যান্য উপাদান পেট পরিষ্কার রাখতে এবং গ্যাস, অম্বল ও বদহজম দূর করতে সাহায্য করে।
রক্ত পরিশোধনে সহায়ক
তেতুল দেহের টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে। নিয়মিত তেতুল খেলে রক্ত পরিষ্কার হয় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
তেতুলে রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
জ্বর কমায়
জ্বর বা শরীরের অতিরিক্ত উত্তাপ কমাতে তেতুল অত্যন্ত কার্যকর। বিশেষ করে তেতুলের শরবত শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে সহায়ক
তেতুল হালকা মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে এবং এতে থাকা ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
হার্টের জন্য ভালো
তেতুল রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নে উপকারী
তেতুলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে, ব্রণ কমায় এবং ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
কাশি ও গলার সমস্যায় উপকারী
গলার খুসখুসে ভাব, কাশি কিংবা গলা ব্যথার সময় তেতুল বেশ উপকারি। অনেকে তেতুল পানি বা শরবত খেয়ে এই সমস্যা থেকে আরাম পান।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
তেতুলে থাকা প্রাকৃতিক আঁশ অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
কীভাবে খাবেন?
তেতুলের মাংসল অংশ সরাসরি খাওয়া যায়।
শরবত বানিয়ে পান করা যায়।
বিভিন্ন রান্নায় বা আচার তৈরি করেও তেতুল খাওয়া যায়।
সতর্কতা
অতিরিক্ত তেতুল খেলে পেট খারাপ বা এসিডিটির সমস্যা হতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের তেতুল খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
দাঁতের ক্ষয় বা ঝামেলা এড়াতে তেতুল খাওয়ার পর ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করা উচিত।
তেতুল শুধু স্বাদে নয়, বরং স্বাস্থ্য রক্ষায়ও অত্যন্ত কার্যকর। এটি হজমে সহায়তা, রোগ প্রতিরোধ, ত্বকের যত্ন, জ্বর কমানো এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে যেকোনো খাবারের মতোই, তেতুলও পরিমিত এবং সঠিকভাবে খাওয়া উচিত।