সহজলভ্য অথচ স্বাস্থ্যগুণে ভরপুর কাঁচা পেঁয়াজ।আমাদের দৈনন্দিন রান্নায় অপরিহার্য উপাদান পেঁয়াজ। কিন্তু অনেকেই জানেন না, রান্না ছাড়াও কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। বিশেষ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কাঁচা পেঁয়াজের গুণাগুণ প্রমাণিত।
কাঁচা পেঁয়াজে যা থাকে:
সালফার যৌগ (অ্যালিসিন)
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
ভিটামিন-সি
ফ্ল্যাভোনয়েড
ফাইবার
আয়রন ও ফোলেট
কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার উল্লেখযোগ্য উপকারিতা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
কাঁচা পেঁয়াজে থাকা সালফার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
ঠান্ডা-কাশি কমায়
কাঁচা পেঁয়াজে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান, যা সর্দি, কাশি ও গলা ব্যথা দূর করতে সহায়ক।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
পেঁয়াজে থাকা সালফার যৌগ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
নিয়মিত কাঁচা পেঁয়াজ খেলে উচ্চ রক্তচাপ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়।
ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে
গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের কিছু উপাদান শরীরের কোষে ক্যানসার প্রতিরোধক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে, বিশেষ করে পাকস্থলি ও অন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
হজমে সহায়ক
কাঁচা পেঁয়াজে থাকা ফাইবার হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমায়।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী
পেঁয়াজে থাকা সালফার ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এটি ত্বক উজ্জ্বল করতে এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে সহায়ক।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
পেঁয়াজে থাকা কিছু যৌগ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার সঠিক উপায়
সালাদে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
খালি পেটে না খাওয়াই ভালো, এতে এসিডিটির সমস্যা হতে পারে।
অতিরিক্ত খেলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে, তাই পরিমিত খাওয়া উচিত।
রক্ত পাতলা করার ওষুধ খেলে বা শারীরিক জটিলতা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কাঁচা পেঁয়াজ অত্যন্ত সহজলভ্য হলেও এর ভেতরে রয়েছে দারুণ সব স্বাস্থ্যগুণ। নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে কাঁচা পেঁয়াজ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো, হজমশক্তি বাড়ানো এবং ত্বক-চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তবে অতিরিক্ত খেলে মুখের দুর্গন্ধ বা এসিডিটির সমস্যা হতে পারে, তাই সচেতনভাবে খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
