রোগ প্রতিরোধে কাঁচা আদা, তবে অতিরিক্ত খাওয়ায় থাকতে হবে সতর্ক।প্রাচীনকাল থেকেই আদা আমাদের রান্নাঘরের পাশাপাশি ভেষজ ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে কাঁচা আদা, যা সরাসরি খাওয়া বা চায়ের সাথে ব্যবহারে নানা ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা দিতে পারে। তবে প্রতিটি উপকারিতার সঙ্গে কিছু সতর্কতাও জড়িত।
কাঁচা আদার পুষ্টিগুণ
জিঞ্জারল (Gingerol)
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
ভিটামিন-সি
ম্যাগনেশিয়াম
পটাশিয়াম
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান
কাঁচা আদা খাওয়ার উপকারিতা
হজমশক্তি বাড়ায়
কাঁচা আদা হজমে সহায়ক। এটি পাচনতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে এবং গ্যাস্ট্রিক, বদহজম, পেট ফাঁপার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
ঠান্ডা-কাশি দূর করে
আদার অ্যান্টি-ভাইরাল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান শ্বাসনালির প্রদাহ কমায় এবং কাশি, ঠান্ডা বা গলা ব্যথায় দ্রুত আরাম দেয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আদায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন ভাইরাস বা সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়।
বাত ও ব্যথা কমায়
কাঁচা আদা খেলে শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধির ব্যথা, বিশেষ করে বাতের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
বমি ভাব ও বমি কমায়
যাত্রীদের গাড়িতে ওঠার সময় বা গর্ভবতী নারীদের সকালে বমি বমি ভাব কমাতে কাঁচা আদা অত্যন্ত কার্যকর।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত পরিমাণমতো কাঁচা আদা খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরল কমায়
কাঁচা আদা খেলে শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমে এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
কাঁচা আদা খাওয়ার অপকারিতা
পেটের অস্বস্তি বা গ্যাস্ট্রিক বাড়তে পারে
অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা আদা খেলে অনেকের পেটে জ্বালাপোড়া বা অস্বস্তি হতে পারে, বিশেষ করে যারা আগে থেকেই গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ভোগেন।
অতিরিক্ত রক্তপাতের ঝুঁকি
আদা রক্ত পাতলা করার কাজ করে। তাই অতিরিক্ত খেলে শরীরে ক্ষত হলে রক্তপাত বেশি হতে পারে বা সারতে দেরি হতে পারে।
নিম্ন রক্তচাপ সমস্যা
যাদের রক্তচাপ স্বাভাবিকের তুলনায় কম, তাদের জন্য অতিরিক্ত আদা খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত আদা খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ
গর্ভাবস্থায় পরিমাণ ছাড়িয়ে গেলে আদা খাওয়া গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।
কিছু ওষুধের সঙ্গে বিরূপ প্রতিক্রিয়া
যদি কেউ ব্লাড থিনার বা ডায়াবেটিসের ওষুধ খান, তাহলে কাঁচা আদা অতিরিক্ত খাওয়া বিপদজনক হতে পারে।
কাঁচা আদা খাওয়ার সঠিক উপায়
প্রতিদিন ১-২ গ্রাম কাঁচা আদা চিবিয়ে খাওয়া নিরাপদ
চায়ের সাথে ছোট টুকরো দিয়ে খাওয়া যায়
সালাদ বা রান্নায় কাঁচা আদা ব্যবহার করা যায়
অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত
কাঁচা আদা প্রাকৃতিকভাবে হজমের উন্নতি, ঠান্ডা-কাশি প্রতিরোধ, ব্যথা কমানো এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত উপকারী। তবে অতিরিক্ত খাওয়া বা ভুলভাবে খেলে শরীরে উল্টো ক্ষতি হতে পারে। তাই নিজস্ব শারীরিক অবস্থা বুঝে, পরিমিত পরিমাণে এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কাঁচা আদা খাওয়াই সবচেয়ে ভালো।