সকালের নাস্তা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সারা দিনের প্রাণশক্তি জোগায় এবং কর্মক্ষমতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালের নাস্তা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক এবং এটি বেশি ক্যালরি পোড়াতেও সহায়তা করে।
সকালে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খেলে মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে, মনোযোগ বাড়ে এবং সারাদিন ক্লান্তিহীন থাকা সম্ভব হয়।
চলুন জেনে নিই, সকালের নাস্তার উপযোগী কিছু স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকা-
রুটি
সকালের নাস্তার জন্য আটার রুটি একটি চমৎকার পছন্দ। পাউরুটি বা ভাতের পরিবর্তে রুটি, সঙ্গে সবজি, ডিম বা ঝোলযুক্ত তরকারি খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী। রুটি সহজপাচ্য এবং এনার্জি সরবরাহে কার্যকর। তবে তেলে ভাজা পরোটা থেকে বিরত থাকা উচিত।
সবজি খিচুড়ি
যাদের সকালে ভাত খাওয়ার অভ্যাস আছে, তারা তার পরিবর্তে খেতে পারেন সবজি খিচুড়ি। চালের পরিমাণ কমিয়ে বেশি পরিমাণে সবজি দিয়ে তৈরি এই খিচুড়ি একদিকে যেমন পুষ্টিকর, অন্যদিকে তেমনি হালকা ও সহজপাচ্য। এটি একটি আদর্শ ভারি সকালের নাস্তা।
ওটস
ওজন নিয়ন্ত্রণ ও হৃদরোগ প্রতিরোধে ওটস একটি চমৎকার খাবার। এতে রয়েছে প্রচুর ফাইবার ও কম ক্যালরি। যদিও অনেকের কাছে ওটস খেতে ভালো না লাগলেও, এতে মধু ও কিছু ফল যোগ করে সুস্বাদু করে তোলা যায়। চাইলে ওটস খিচুড়িও তৈরি করা যেতে পারে।
ডিম
ডিমকে ‘সুপারফুড’ বলা হয়। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলস, যা শরীরের শক্তি ধরে রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন সকালে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ১-২টি ডিম খেতে পারেন। তবে যাদের ওজন বেশি বা কোলেস্টেরল সমস্যা রয়েছে, তাদের কুসুম বাদ দিয়ে সাদা অংশ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
শস্যজাতীয় খাবার
শস্যজাতীয় খাবার যেমন—চিড়া, মুড়ি, কর্নফ্লেক্স বা গ্রেইন সিরিয়াল হজমে সহায়ক ও দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। এসব খাবারে থাকা আঁশ হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তবে প্রক্রিয়াজাত ও উচ্চ ক্যালরিযুক্ত শস্যজাত খাবার বেছে নেওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন জরুরি।
দই
দইয়ে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও প্রোবায়োটিক উপাদান, যা হাড়ের গঠন ও পরিপাকতন্ত্রের জন্য উপকারী। সকালের নাস্তায় দই খাওয়া হলে তা সারাদিনের জন্য দেহে চনমনে ভাব ও শক্তি বজায় রাখতে সহায়তা করে। চাইলে দইয়ের সঙ্গে মৌসুমি ফল মিশিয়ে আরও পুষ্টিকর করে তোলা যায়।
সকালের নাস্তা কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। এটি শরীর ও মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম রাখে, মানসিক একাগ্রতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিনের শুরু হোক স্বাস্থ্যকর এক বাটির খাবার দিয়ে।