সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৫, ০৫:৩৬ পিএম

ব্লুটুথ হেডফোনে ক্যানসারের ঝুঁকি, বিজ্ঞান কী বলছে?

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৫, ০৫:৩৬ পিএম

ব্লুটুথ ইয়ারপোড। ছবি- সংগৃহীত

ব্লুটুথ ইয়ারপোড। ছবি- সংগৃহীত

দীর্ঘসময় ধরে ব্লুটুথ হেডফোন বা ওয়্যারলেস ইয়ারফোন ব্যবহার করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক বহুদিনের। একদিকে যেমন প্রযুক্তিপ্রেমীরা এর সুবিধা উপভোগ করছেন, তেমনই স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে।

তবে সাম্প্রতিক গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর মতামত এই বিতর্কে একটি বস্তুনিষ্ঠ চিত্র তুলে ধরেছে।

বিকিরণের মাত্রা ও প্রকৃতি

ব্লুটুথ ডিভাইসগুলো রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি বিকিরণ (আরএফআর) নির্গত করে কাজ করে। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই বিকিরণের মাত্রা মোবাইল ফোনের তুলনায় ১০ থেকে ৪০০ গুণ পর্যন্ত কম। এই বিকিরণ নন-আয়নাইজিং প্রকৃতির, যার অর্থ হলো এর শক্তি এতটাই কম যে তা মানব কোষের ডিএনএ-কে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করে ক্যানসারের মতো পরিবর্তন ঘটাতে পারে না।

এক্স-রে বা গামা রশ্মির মতো আয়নাইজিং বিকিরণই কেবল ডিএনএ-এর গঠন ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ২০১৯ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ব্লুটুথের বিকিরণ এক্স-রের তুলনায় লাখ লাখ গুণ দুর্বল।

প্রধান স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর মতামত

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো এই বিষয়ে একমত যে, বর্তমানে ব্লুটুথ ডিভাইস ব্যবহারের সঙ্গে ক্যানসারের ঝুঁকির কোনো সরাসরি সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট (এনসিআই) স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, ব্লুটুথ থেকে নির্গত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি বিকিরণ এতটাই দুর্বল যে তা মানবদেহে ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি করে না

ইয়ারপোড। ছবি- সংগৃহীত

একই সুরে দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি), খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এবং ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশনও (এফসিসি) জানিয়েছে যে, ব্লুটুথ ডিভাইসের কারণে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে এমন কোনো নির্ণায়ক প্রমাণ তাদের কাছে নেই।

বিতর্কের উৎস ও আইএআরসি’র সতর্কতা

এই উদ্বেগ মূলত শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে, যখন বিশ্বের ২০০ জনের বেশি বিজ্ঞানী জাতিসংঘ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-কে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড (ইএমএফ) বিকিরণের সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিষয়ে কঠোর নীতিমালা প্রণয়নের জন্য আবেদন জানান।

এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধীনস্থ আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা সংস্থার (আইএআরসি) একটি শ্রেণিবিন্যাস। ২০১১ সালে আইএআরসি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি বিকিরণকে (আরএফআর) ‘গ্রুপ ২বি’ অর্থাৎ ‘সম্ভাব্য ক্যানসার সৃষ্টিকারী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

তবে এই তালিকাভুক্তিটি করা হয়েছিল মূলত মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিয়ে হওয়া কিছু গবেষণার সীমিত প্রমাণের ভিত্তিতে, যেখানে অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে এক ধরনের মস্তিষ্কের টিউমার (গ্লিওমা)-এর ঝুঁকি কিছুটা বাড়তে দেখা গিয়েছিল। এটি কোনো নিশ্চিত প্রমাণ নয়, বরং আরও গবেষণার প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।

শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা

বিশেষজ্ঞরা শিশুদের ক্ষেত্রে কিছুটা বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দেন। এর কারণ, শিশুদের মাথার খুলি প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় পাতলা হয়, যার ফলে তাদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে বেশি বিকিরণ শোষণ করতে পারে। যদিও ব্লুটুথের বিকিরণ অত্যন্ত কম, শিশুদের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। এই কারণে, অপ্রয়োজনে দীর্ঘ সময় ধরে শিশুদের ব্লুটুথ হেডফোন ব্যবহার করতে না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বর্তমান বৈজ্ঞানিক প্রমাণ অনুযায়ী, ব্লুটুথ হেডফোন বা ওয়্যারলেস ইয়ারফোন ব্যবহারে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ার কোনো শক্ত প্রমাণ নেই। এর থেকে নির্গত বিকিরণের মাত্রা অত্যন্ত কম এবং তা মানবকোষের ক্ষতি করার মতো শক্তিশালী নয়।

যদিও আইএআরসি’র সতর্কতামূলক শ্রেণিবিন্যাস এবং শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের বাড়তি সাবধানতার মতো বিষয়গুলো এই বিতর্ককে জিইয়ে রেখেছে, তবে মূলধারার স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এটিকে তেমন কোনো ঝুঁকি হিসেবে দেখছে না। প্রযুক্তি ব্যবহারে সংযম এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার এড়িয়ে চলাই এক্ষেত্রে সর্বোত্তম পন্থা।

Shera Lather
Link copied!