বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায় সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় বাতিল করে আপিল বিভাগের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে রায়ের এই অনুলিপি প্রকাশ করা হয়।
গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় দিয়েছিলেন। আপিল বিভাগ বলেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আয়কর আরোপ শিক্ষার্থীদের খরচ বাড়াবে-হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণ সঠিক নয়।
কারণ, আয়কর কেবল তখনই দিতে হয়, যখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আয় করে। লোকসান হলে কোনো কর দিতে হয় না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০০৭ সালের ২৮ জুন ও ২০১০ সালের ১ জুলাই দুটি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর নির্ধারণ করে।
এই দুটি প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে একাধিক রিট করা হয়।
রিটকারীদের মধ্যে রয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রামসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দুটি প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে এবং সর্বোচ্চ আদালতের চেম্বার বেঞ্চ ওই রায় স্থগিত করে। পরে রাষ্ট্রপক্ষ ৪৫টি ‘লিভ টু আপিল’ করে, যা ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুর হয়।
চূড়ান্ত শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রায় দেন, যা ২০২৫ সালের জুনে পূর্ণাঙ্গ রূপে প্রকাশিত হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলায় ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, প্রবীর নিয়োগী, ওমর সাদাত ও সাখাওয়াত হোসেন।