বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে ব্যাপক মাত্রায় গুলি ছুড়েছিল পুলিশ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর জানিয়েছেন, আন্দোলনের সময় সারা দেশে ৩ লাখ ৫ হাজার ১১ রাউন্ড গুলি ব্যবহৃত হয়েছিল। এর মধ্যে ঢাকা শহরে ব্যবহার করা হয়েছিল ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের ৫৪তম ও সর্বশেষ সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দিতে আলমগীর এসব তথ্য প্রকাশ করেন।
ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই শুনানি গ্রহণ করে। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আলমগীর জানান, তিনি তার তদন্তকালে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জুলাই আন্দোলন দমনে ছাত্রজনতার ওপর ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি সংক্রান্ত ২২৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন পেয়েছিলেন। প্রতিবেদনে উল্লেখিত হয়েছে, এলএনজি, চাইনিজ রাইফেল, শর্টগান, রিভলবার, পিস্তলসহ বিভিন্ন ধরনের মারণাস্ত্র ব্যবহার করে ঢাকা শহরে ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড এবং সারা দেশে মোট ৩ লাখ ৫ হাজার ১১ রাউন্ড গুলি ব্যবহৃত হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, তিনি ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন, র্যাব সদর দপ্তর থেকে হেলিকপ্টার ব্যবহারের প্রতিবেদন এবং ৮১টি অজ্ঞাত পরিচয় লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করেছেন।
জবানবন্দিতে আলমগীর বলেন, পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গত বছরের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে আন্দোলন দমনে শান্তিপূর্ণ ছাত্রজনতার ওপর ব্যাপক মাত্রায় প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন