জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে। রাজসাক্ষী হিসেবে ইতিমধ্যে তিনি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ মামলায় পলাতক রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৯টার পর কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামুনকে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আনা হয়। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চে আজ রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ফলে তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। অন্যদিকে, শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। মামুন কারাগারে থাকলেও তার সহযোগিতামূলক ভূমিকার বিষয়টি আদালতের বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। গত ২৩ অক্টোবর মামলার সমাপনী বক্তব্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ দণ্ড দাবি করেন। যুক্তিতর্কে অংশ নেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন। এরপর আজ রায়ের তারিখ ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়। ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানিয়েছে, রায় আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিন ঘোষণা হতে পারে।
এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় চলতি বছরের ৩ আগস্ট। প্রথম সাক্ষী হিসেবে খোকন চন্দ্র বর্মণ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ বর্ণনা দেন। সর্বশেষ ৮ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ হয়।
প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো।
অভিযোগের মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৮,৭৪৭। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২,০১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও প্রমাণাদি ৪,০০৫ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২,৭২৪ পৃষ্ঠা। মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে মোট ৮৪ জনকে। গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন