জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের খবর প্রকাশে পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর একটি বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেছিলেন, ‘আমার সুনিদিষ্ট প্রস্তাব হচ্ছে এই ট্রাইব্যুনাল যেন স্থায়ী থাকে। এটা যেন কয়েকটা বিচার করে যেন শেষ না হয়। রাজনৈতিক ঋতু পরিবর্তনের পরও এর কার্যক্রম যেন অব্যহত থাকে।’
২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় ৬ বারের সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর। বিতর্কিত এক বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার তার ফাঁসি কার্যকর করে।
এ দিকে, জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মানুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করে। এই ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রায়ে আদালত বলেছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড, একটিতে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মানুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো হলো-
উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া, হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ‘হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ’ দেওয়া, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যার ঘটনায় প্ররোচনা, উসকানি, ষড়যন্ত্র, সহায়তা, সম্পৃক্ততার অভিযোগ। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর চাঁনখারপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা ছয়জনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ। আশুলিয়ায় জীবিত একজনসহ মোট ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ।
এ ছাড়াও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নামে দেশে থাকা সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।


