বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম

অন্তর্বর্তী সরকারের ৬০ দিন পার

এখনও শেষ হয়নি সচিব-জেলা প্রশাসক নিয়োগ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম

এখনও শেষ হয়নি সচিব-জেলা প্রশাসক নিয়োগ

ছবি: সংগৃহীত

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পর পরই ড. মুহাম্মাদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন গঠন করা হয়।  এই সরকার দায়িত্ব গ্রহণের দুই মাসেরও বেশি সময় পার হলেও এখনও ৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সচিব, ৮ জেলায় ডিসি এবং দুই বিভাগে বিভাগীয় কমিশনারসহ বেশ কিছু দপ্তর ও সংস্থার মহাপরিচালক ও চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি। সূত্র: ইউএনবি

জানা গেছে, প্রশাসনের টেবিলে টেবিলে ঘুরছে সাবেক সরকারের অসম্পূর্ণ রেখে যাওয়া পদোন্নতি ও পদায়ন বঞ্চিতদের নথিপত্র। ফলে বঞ্চিত ও সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্তদের মধ্যেও রয়েছে অসন্তোষ। সচিব ও ডিসির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্যতা পূরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়েরও কোনো তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে না। যোগ্য কর্মকর্তা বাছাই ও পদায়নের কাজও চলছে ধীর গতিতে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ বঞ্চনার পর অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েও অনেকেই পোস্টিং পাওয়ার আগেই অবসরে চলে গেছেন। এই তালিকার মাত্র তিনজন কর্মকর্তাকে সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সচিবের ৮টি পদ শূন্য রয়েছে।

অন্যদিকে এখনও ৮টি জেলায় ডিসি এবং দুই বিভাগে বিভাগীয় কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এসব শুন্য পদে বিভিন্ন ব্যাচের বঞ্চিত যোগ্য কর্মকর্তাদের উপযুক্ত পদে পদায়নের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন ব্যাচের বঞ্চিত কর্মকর্তারা।

এছাড়াও দীর্ঘ বঞ্চনার পর যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া ১৩৩ জনের মধ্যে ৬৫ জনকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছে। ৪৫ জন পূর্বের পদে রয়েছেন। এসব দপ্তরে দায়িত্ব পাওয়া অতিরিক্ত সচিবরা তাদের রুটিন কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন ফলে তারা কোনো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না।  বাকিদের পদায়নের ফাইল ঘুরছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে যুগ্ম সচিব ও অধিদপ্তরের পরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। অথচ বঞ্চিতদের পদায়নের ফাইল পথে পথে আটকে গেলেও সাবেক হাসিনা সরকারের সময়ের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকরা এবং বিভিন্ন অধিদপ্তর ও কর্তৃপক্ষের পরিচালকরা এখনও বহাল তবিয়তে আছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, হাসিনা সরকারের সাড়ে ১৫ বছর পর আগস্টে পদোন্নতি পেয়ে অবসরে গেছেন বেশ কয়েকজন অতিরিক্ত সচিব।  আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বঞ্চিত ২০৬ অতিরিক্ত সচিবের মধ্য থেকে যে তিনজনকে সচিব করা হয়েছে তারা হলেন- তথ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার উল্লাহ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের মো. ফাহিমুল ইসলাম। তাদের মধ্যে থেকে গ্রেড-১ পদমর্যাদা দেওয়া হয়েছে পাঁচজন অতিরিক্ত সচিবকে। এর মধ্যে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রজেন্দ্র নাথ সরকার, ড. মনিরুল হুদাসহ আরও তিন কর্মকর্তা রয়েছেন।

এছাড়াও ছয়জন অতিরিক্ত সচিবকে বিভিন্ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ড. এবিএম মাহবুব আলমকে জাতীয় প্রশাসন উন্নয়ন একাডেমির-এমডিএস, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. আতাউর রহমান, ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলীম আখতার খানসহ আরও তিনজন এ পদে পোস্টিং পেয়েছেন।

বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান করা হয়েছে বঞ্চিত দুই কর্মকর্তাকে। এদের একজনকে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন এবং আরেকজনকে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (এনএইচএ) চেয়ারম্যান হিসাবে পদায়ন করা হয়।

তথ্য সূত্রে জানা যায়, ৬৪ জেলায় সাবেক সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকই রয়েছে। ৪৯ জেলা নতুন ডিসিরা যোগদান করার এক মাস হলেও এডিসিদের বাধার কারণে অনেক জেলায় ডিসিরা কাজ করতে পারছে না। এরইমধ্যে অনেক উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা প্রত্যাহার করা হচ্ছে কিন্তু অনেক উপজেলায় দুই বছরের বেশি থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা হয়নি। আবার অনেক সহকারী কমিশনাদের প্রত্যাহার না করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ৮ সচিব নেই

বর্তমানে তিন মন্ত্রণালয় ও পাঁচ বিভাগে সচিবের পদ ফাঁকা রয়েছে। তিন মন্ত্রণালয় হলো– তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আর সচিব না থাকা বিভাগগুলো হলো- পরিকল্পনা বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও স্থানীয় সরকার বিভাগ। এছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগে সচিব পদমর্যাদায় একজন সদস্যের পদ ফাঁকা রয়েছে।

যে ৮ জেলায় নেই ডিসি

কোনো ডিসি ছাড়াই চলছে দেশের আট জেলা। গত ১০ সেপ্টেম্বর ডিসি হিসেবে নতুন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার পর ১১ সেপ্টেম্বর তাদের মধ্যে আটজনের নিয়োগ বাতিল করায় এই আট জেলার ডিসির পদ ফাঁকা হয়ে যায়। এখনও ৮ জেলায় কাউকে পদায়ন করা হয়নি। জেলাগুলো হলো- রাজশাহী, নাটোর, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর ও দিনাজপুর। এসব জেলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকরা (এডিসি) রুটিন কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার উল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন বঞ্চিত কর্মকর্তাদের যেন যার যার যোগ্যতা অনুযায়ী ভালো জায়গায় পদায়ন করা হয়। সবাইকে সচিব বানাতে হবে এমন বলছি না। সচিব পদ ছাড়াও বিভিন্ন অধিদপ্তরের ডিজি, কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বিভাগীয় কমিশনার হতে তো বাধা নেই।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার ইউএনবিকে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাস পার করলেও এখনও ৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সচিব, ৮ জেলায় ডিসি এবং দুই বিভাগে বিভাগীয় কমিশনার নিয়োগ দিতে পারেনি। অথচ বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিলেও তাদের পদায়ন নিয়ে গড়িমসি করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদায়নের বিষয়ে পদে পদে ফাইল আটকে রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রশাসনে বঞ্চিতরাই বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। সাবেক হাসিনা সরকারের আমলে তারা গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করা সুবিধাভোগী কর্মকর্তারা অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন।

আব্দুস সাত্তার আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৫৪ জন অতিরিক্ত সচিবকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পদায়ন করা হয়েছে। পদোন্নতি পাওয়ার পর এখনও পূর্বের পদে পদায়িত আছেন ৭৯ জন অতিরিক্ত সচিব। বেশ কয়েকজন অতিরিক্ত সচিবের পদায়নের ফাইল চালাচালির মধ্যে রয়েছে। এখনও ভালো জায়গায় পদায়ন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস-উর রহমান বলেন, শুন্য পদে সচিব ও শুন্য পদে ডিসি, বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভিন্ন দপ্তরে দ্রুত নিয়োগ সময়েই দেওয়া হবে। পদায়নের বিষয়টা আমরা বুঝে শুনে দিচ্ছি যাতে কোনো প্রশ্ন না আসে।

সচিব ড. মো. মোখলেস-উর রহমানবলেন, এছাড়া প্রশাসনে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের তার যোগ্যতা অনুযায়ী পদায়নের বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছি। যার যার যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের পদায়ন করা হবে। আশা করি বঞ্চিতরা বৈষম্যের শিকার হবেন না।

আরবি/জেআই

Link copied!