৯৯৯-এ কল পেয়ে কক্সবাজারের চকরিয়াতে অপহরণের শিকার এক চিংড়ি ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করার পর অপহৃত সেই ভিকটিমকেই আসামি বানিয়ে কারাগারে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে ওসি শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অপহৃতের স্ত্রী রোমানা আক্তার।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কাছে করা অভিযোগে রোমানা আক্তার জানান, গত ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলার দুলাহাজারা বাজার এলাকা থেকে তার স্বামী আবু ছৈয়দকে অপহরণ করে একটি চক্র। পরে বিষয়টি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ জানানো হলে অভিযান চালিয়ে অপহৃতকে উদ্ধার করেন চকরিয়া থানার উপ পরিদর্শক হান্নান। উদ্ধার হওয়ার পর আবু ছৈয়দ পুলিশকে জানান, অপহরণকারীরা তাকে শারীরিক নির্যাতন করাসহ তার কাছে থাকা দেড় লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
রোমানা আক্তারের অভিযোগ, ঘটনার পরদিন চকরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আবু ছৈয়দের স্ত্রী রোমেনা আক্তার। থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গ্রহণ করলেও তা মামলা হিসেবে রেকর্ড না করে উল্টো তার স্বামীকে অপর একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। ঘটনার ৫ দিন পর এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি মামলা গ্রহণ এবং সে মামলায় তার স্বামী আবু ছৈয়দকে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেন তিনি।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১২ এপ্রিল ভোর রাতে চকরিয়া থানাধীন ঘুটাখালী এলাকায় হাজী আলিমুদ্দিন ওয়াক্ফ এস্টেটের মালিকানাধিন একটি চিংড়ি ঘেরকে ঘিরে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় দুটি পক্ষ। উভয়পক্ষ সংঘর্ষে গোলাগুলিসহ লুটপাটের অভিযোগ করেন। ঘটনার পর ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও গোলাগুলির মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে চকরিয়া থানা পুলিশ কোনো অভিযোগ না নিলেও ১৬ এপ্রিল আবু ছৈয়দকে অপহরণ করার পর মধ্যরাতে (১৭ এপ্রিল) আব্দুল মালেক এবং আক্তার আহমদ নামে দুই পক্ষের দুটি মামলা এজাহার হিসেবে রেকর্ড করে চকরিয়া থানা পুলিশ। এসব মামলায় অস্ত্র প্রদর্শন, গুলি ছোড়া, মাছ ও সরঞ্জাম লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়।
একটি মামলার বাদী লবণ চাষি আবদুল মালেক জানান, ‘১২ এপ্রিল ভোররাতে একদল লোক মাছের ঘোনায় হামলা চালিয়ে গুলি ছোড়ে, মাছ ও লবণ লুট করে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। অপর মামলার বাদী আক্তার আহমদ একইভাবে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হামলার অভিযোগ তোলেন এবং ২০-২৫ রাউন্ড গুলি ছোড়ার কথা জানান।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আবু ছৈয়দকে অপহরণ করা হয়নি। তাকে আটকে রাখা হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করেছে।’
তিনি আরও জানান, ‘তাদের দুই পক্ষের মধ্যে মাছের ঘোনা নিয়ে বিরোধ থেকে ১২ এপ্রিল ঘুটাখালীতে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় করা একটি মামলায় আবু ছৈয়দ আসামি বলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’
[45821
এ বিষয়ে মানবাধিকার আইনজীবী জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ‘কেউ অপহরণের শিকার হলে তাকে উদ্ধার করে আইনগত সহায়তা দেওয়া পুলিশের দায়িত্ব। আবু ছৈয়দ যদি অপহরণের শিকার হয়ে থাকে তাকে উদ্ধার করার পর পূর্বের একটি ঘটনায় মামলা রেকর্ড করে ভিকটিমকে আসামি বানানো ন্যায় বিচারের পরিপন্থি। এখন ভিকটিম ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য পুলিশ সিকিউরিটি সেলে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।’

 
                             
                                    
 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031160223.webp) 
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন