ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

দায়িত্ব পেলে বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া যাবে : রফিকুল আমীন

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৫, ০৬:৫৪ পিএম
বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টির আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আমীন। ছবি- সংগৃহীত

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কীভাবে অত্যাচার করেছে, তার বর্ণনা দিয়ে বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টির আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আমীন বলেছেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় দুদকের টপ টু বটম ছিল দুর্নীতিগ্রস্ত।’

বুধবার (১৪ মে) রাজধানীর ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোটার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।

রফিকুল আমীন বলেন, ডেসটিনি নিয়ে দুদকের মামলার এফআইআরে (প্রাথমিক তথ্য বিবরণী) মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ ছিল না। পরবর্তী সময়ে দুদক অতি-উৎসাহী হয়ে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা করে।

তিনি বলেন, দুদকের টর্চার সেলে পেটানো থেকে শুরু করে গরম পানিও ঢালা হতো। রায় হওয়ার আগেই আমাকে সর্ব্বোচ্চ সাজা খাটানো ছিল ফ্যাসিস্ট সরকারের একটি প্ল্যান।  

রফিকুল জানান, ডেসটিনির ম্যানেজমেন্ট বোর্ডে পুনরায় তাকে দায়িত্ব দেওয়া হলে বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া যাবে।      

ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।

এর আগে রফিকুল আমীনের সংক্ষিপ্ত জীবনী উপস্থাপন করেন সোহেল। পরে তাকে রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

ডেসটিনির ব্যবসা ও মামলা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে রফিকুল আমীন বলেন, আমার কাছে সততা হচ্ছে একমাত্র পন্থা। ডেসটিনি গ্রুপ সততার সঙ্গে ব্যবসা করেছে। সরকারকে নিয়মিত কর দিয়ে গেছে। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকার ডেসটিনিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা মানুষের জাগরণকে মেনে নিতে পারেনি।

তিনি বলেন, আমরা তাদের রোষানলে পড়ে যাই। ফ্যসিস্টদের লক্ষ্যই ছিল মামলা করে বেশি সাক্ষী অর্ন্তভুক্ত করে আমাকে দীর্ঘদিন আটকে রাখা। অথচ ২১৯ সাক্ষীর মধ্যে একজনও ডেসিটিনির বিনিয়োগকারী কিংবা সাধারণ মানুষ ছিল না।

তিনি আরও বলেন, আফসোসের বিষয় আমিসহ সবাই জেল থেকে বের হলেও আমার নিরপরাধ স্ত্রী এখনো জেলে। অথচ ডেসটিনির কর্মকাণ্ড পরিচালনায় তার প্রত্যক্ষ কোনো সম্পর্ক ছিল না। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রশ্নে রফিকুল আমীন বলেন, বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার মালিক ডেসটিনির বর্তমান বোর্ড। তবে আমাকে যদি পুনরায় বোর্ডে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে বিনিয়োগকারীদের টাকা দ্রুতই ফেরত দেওয়া যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। 

তিনি আরও বলেন, সরকার ডেসটিনির ব্যাংক হিসাব খুলে দিলে তার পরের মাস থেকেই বিনিয়োগকারীদের টাকা দেওয়া শুরু হবে। তবে আমি এখনো ম্যানেজমেন্টে নেই। দায়িত্বের নৈতিক জায়গা থেকে বিনিয়োগকারীরা যাতে টাকা ফেরত পায়, সে চেষ্টা আমি সবসময়ই করে যাব।

ডেসটিনি ছাড়া নতুন কোনো কোম্পানি করার কথা ভাবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ডেসটিনি আমার প্রাণ, আমি বারো বছরের বেশি সময় জেল খেটেছি ডেসটিনির জন্য। 

ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের কোনো ঋণ নেই উল্লেখ করে রফিকুল আমীন বলেন, ট্রি প্ল্যানটেশন ও মাল্টিপারপাসের যে ৩ হাজার কোটি টাকা দায় রয়েছে- তা ডেসটিনি গ্রুপের ৬ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ থেকে শোধ করা সম্ভব। 

দলের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, দলের আগের নামটি আরেকটি দলের নামের কাছাকাছি হওয়ায় ওদের পক্ষে আপত্তি ছিল। সুস্থ গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতি চর্চাকে প্রাধান্য দিয়ে ও ওদের আপত্তিকে সম্মান জানিয়ে দলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

রফিকুল বলেন, আমি রাজনৈতিক দল করেছি নিরীহ মানুষের ওপর হওয়া অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে। বিগত বারো বছর এবং এখনো আমি ব্যবসার বাইরে। ব্যবসার স্বার্থে রাজনীতি করতে আমি আসিনি। আমি মনে করি, যত বেশি দল আসবে, ততবেশি ভিন্নমতের কথা আসবে। তাতে গণতন্ত্রের পথ প্রসারিত হবে।

বর্তমানে আমজনগণ পার্টির জেলা কমিটি গঠনের কাজ চলছে জানিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দলের নিবন্ধন পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, তা পূরণ করে আগামী ২২ জুনের আগেই নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হবে।