রাজধানীজুড়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। ঈদকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে পশুর হাট, শপিংমলগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। এর মধ্যেই প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ, ফলে ধীরে ধীরে ফাঁকা হয়ে আসছে রাজধানী।
এই পরিস্থিতিতে ঢাকা এবং ঢাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্য এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। গোয়েন্দা নজরদারি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হয়েছে।
ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে সরকারি বাহিনীর সদস্যরা সক্রিয় রয়েছেন। প্রতিটি ঈদগাহে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
যেহেতু বিপুল সংখ্যক মানুষ ঈদ উদযাপনের জন্য রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছেন, তাই ফাঁকা হতে যাওয়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ফাঁকা ঢাকায় রাস্তাঘাট ও বাসা-বাড়িতে যেন চুরি-ছিনতাই না হয়, সেজন্য এলাকাভিত্তিক বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকবে।
ডিএমপি ও র্যাবের সুসংহত নিরাপত্তা পরিকল্পনা
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সুইপিং, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেক করাসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আবাসিক এলাকায় পুলিশের মোবাইল পেট্রোল বাড়ানো হয়েছে এবং বিভিন্ন ব্যাংক ও এটিএম বুথের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ চেকপোস্ট, তল্লাশি ও গাড়ি চেকিং কার্যক্রম জোরদার করেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদের আগে ও পরে এবং ঈদের ছুটিতে ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডিএমপি সতর্ক।
এদিকে র্যাব জানিয়েছে, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে সারাদেশে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঈদ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাবের কন্ট্রোলরুম, মোবাইল পেট্রোল, ক্যাম্প, অবজারভেশন পোস্ট, চেকপোস্ট এবং সিসিটিভি মনিটরিং শুরু হয়েছে।
এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের নাশকতার সুনির্দিষ্ট তথ্য না পাওয়া গেলেও, গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার জগতে নজরদারি বাড়ানোর মাধ্যমে নাশকতাকারীদের যেকোনো ধরনের পরিকল্পনা রোধে এই বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত।
এদিকে সরকারি সূত্রে জানা গেছে, জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করতে পারে, সেজন্য বিজিবি সদস্যরা সীমান্তের নিরাপত্তা বিধান, দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ঈদ জামায়াত ইত্যাদির নিরাপত্তা বিধানে সর্বদা সচেষ্ট ও তৎপর থাকবে।
এছাড়াও ঈদে নিরাপত্তায় আনসার সদস্যরা মাঠে থাকবে এবং গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা যেকোনো ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে সক্রিয় থাকবেন।
ঈদের ছুটিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাজধানীর গাবতলী পশুর হাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ঈদে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ইনশাআল্লাহ খুবই ভালো থাকবে।
আপনারা সবাই ছুটিতে চলে গেলেও আমাদের ইউনিফর্ম বাহিনী কিন্তু থেকে যাচ্ছে। এজন্য কোনো অসুবিধা হবে না।
আপনার মতামত লিখুন :