যুক্তরাজ্য সফররত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকটি শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
ঢাকা ও লন্ডনের কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির দিক থেকেও সাক্ষাৎ ও বৈঠক নিয়ে ইতিবাচক সাড়া থাকায় গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকটি হতে যাচ্ছে।
এই বৈঠককে এ সময়ের বড় ‘পলিটিক্যাল ইভেন্ট’ হিসেবে অভিহিত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ বৈঠকে অনেক সুযোগ তৈরি হতে পারে। অনেক সমস্যার সমাধানও হতে পারে। নতুন ডায়মেনশন তৈরি হতে পারে। এক কথায় সম্ভাবনা অনেক। আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে সম্পূর্ণ অথরিটি দিয়েছি, তার সাফল্য প্রার্থনা করেছি।
এর আগে, বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন দাবির মধ্যে ঈদুল আজহার আগের দিন গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে।
এর ভিত্তিতে ওইদিন রাতেই জরুরি এক বৈঠকে বসে বিএনপি। সেই বৈঠকে নির্বাচনের নতুন রোডম্যাপ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়।
এ ছাড়া নীতিনির্ধারকদের ওই বৈঠকে লন্ডনে ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠকের বিষয়টি নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়।
তবে জানা গেছে, ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোন কোন ইস্যুতে আলোচনা করবেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সেই দায়িত্ব পুরোপুরি তারেক রহমানের ওপর অর্পণ করা হয়। লন্ডনে এ বৈঠকে তারেক রহমানের সঙ্গে তার দু-একজন উপদেষ্টাও থাকতে পারেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপি কী চায় এবং কেন চায়- ড. ইউনূসের কাছে সেটি লিখিতভাবে তুলে ধরতে পারেন তারেক রহমান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে বৈঠকে মূলত তিনটি ইস্যু প্রাধান্য পেতে পারে। নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার। ডিসেম্বরে না হলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে অর্থাৎ রোজার আগে যাতে নির্বাচন হয়ে যায়, সে বিষয়ে তারেক রহমান সর্বোচ্চ জোর দিতে পারেন বৈঠকে।
বিএনপির দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতা বলেন, সরকারের যেসব সংস্কার প্রস্তাব এরই মধ্যে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে, ড. ইউনূসকে সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে বলবেন তারেক রহমান। বিএনপির অবস্থান হচ্ছে, ঐকমত্য হলেও যেসব সংস্কারে সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন, সেটা নির্বাচিত সংসদ করবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক মতৈক্য তৈরিতে উদ্যোগ নিতে সরকারপ্রধানকে আহ্বান জানাবেন তিনি। আর যেসব সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়নি, সেগুলো নিয়ে নির্বাচিত পরবর্তী সংসদে আলোচনা হবে।
তারা বলেন, বিএনপি যে আওয়ামী লীগের গণহত্যার বিচার চায় এবং এটি নিয়ে যে তাদের কোনো ধরনের আপস নেই, সেটিও তারেক রহমান স্পষ্ট করে তুলে ধরবেন।
বিএনপির নেতাদের মতে, তারেক রহমান বৈঠকে ড. ইউনূসের কার্যক্রমের প্রশংসার পাশাপাশি ড. ইউনূস যে একটা ক্রিটিক্যাল সময়ে সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন, সেটাও তাকে বলবেন।
আপনার মতামত লিখুন :