সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ নিয়ে আপাতত আর আন্দোলনে যাচ্ছে না সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ। দীর্ঘ আন্দোলনের পর সরকার যে সংশোধনী এনেছে, তাতেই তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছে। যদিও আন্দোলন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করেনি সংগঠনটি, তবে নতুন কোনো কর্মসূচিও দিচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫-এর খসড়া ইতোমধ্যে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন পেয়েছে। এতে বিতর্কিত ‘কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুতির বিধান’ বাতিল করা হয়েছে। পরিবর্তে পেনশনসহ আর্থিক সুবিধা দিয়ে বাধ্যতামূলক অবসরের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
কী ছিল বিতর্কের মূল বিষয়?
প্রথম অধ্যাদেশে চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিভাগীয় তদন্ত ছাড়াই শুধুমাত্র একটি চিঠির মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের বরখাস্ত করার বিধান ছিল। এ নিয়ে সরকারি দপ্তরগুলোতে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কর্মচারীরা আশঙ্কা করেন, এতে ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা ও রাজনৈতিক নিপীড়নের পথ সুগম হবে।
এ কারণে গত ২৪ মে থেকে সচিবালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে কর্মচারীরা কর্মবিরতি, বিক্ষোভ, স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন।
আন্দোলন কি পুরোপুরি শেষ?
সচিবালয়ের আন্দোলনরত কর্মচারীদের একাংশের মহাসচিব নিজাম উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকার আমাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশ সংশোধন করেছে। আমরা সন্তুষ্ট। আপাতত নতুন কোনো কর্মসূচি নেই। তবে অধ্যাদেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে জারি হওয়ার পর আমাদের চূড়ান্ত অবস্থান জানানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, চাকরি আইন ইস্যুর বাইরে সংযুক্ত পরিষদের ঘোষিত ৯ দফা দাবি অনুযায়ী আন্দোলন আগের মতোই চলবে।
চাকরি অধ্যাদেশের প্রতিবাদে ২২ জুন কর্মচারীরা অর্থ মন্ত্রণালয় ঘেরাও করেন। আন্দোলনের চাপে সরকার অধ্যাদেশটি পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করে। পরবর্তীতে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের মাধ্যমে আলোচনার পথ খোলা হয়। তিনিই সংশোধনের পক্ষে মত দেন, যা পরে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হয়।
অধ্যাদেশ সংশোধনে কী আছে?
নতুন খসড়ায় বাতিল করা হয়েছে, কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই বরখাস্তের ধারা। অনানুগত্য বা কাজে অনুপস্থিতিতে প্ররোচনার অভিযোগ। রাষ্ট্রপতির আদেশে আপিল নিষেধাজ্ঞা (এখন পুনর্বিবেচনার সুযোগ থাকছে)।
অর্থাৎ এখন আর একতরফাভাবে চাকরিচ্যুত করা যাবে না, বরং সংক্ষিপ্ত প্রক্রিয়ায় বাধ্যতামূলক অবসরের পথ রাখা হয়েছে।
আন্দোলন কি স্থায়ীভাবে শেষ?
এ বিষয়ে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মুহা. নুরুল ইসলাম বলেছিলেন, যদি কেউ ভাবে আন্দোলন শেষ, তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। প্রয়োজনে আরও বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে।
তবে এখন সংগঠনগুলো স্পষ্ট করে বলছে, সংশোধনের খসড়া দেখে তারা আন্দোলন স্থগিত রেখেছে।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031160223.webp) 
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন