দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটল আজ। রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৯ জন নিহতের খবর নিশ্চিত করেছে আইএসপিআর। আহত হয়েছে আরও অনেকে।
দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে বিধ্বস্ত প্লেনের অংশবিশেষ দেখে বোঝা যাচ্ছে, বিমানটি স্কুল ভবনের সামনে পড়ে ছিটকে ভবনের সিঁড়ির সামনে চলে যায়। আর এর দুটি পাখার আঘাতে ধ্বংস হয় শিক্ষার্থীতে পরিপূর্ণ দুটি ক্লাসরুম। আক্রান্ত ওই দুই কক্ষ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ওই ভবনে প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস হতো বলে জানায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিমান বিধ্বস্তের সময় সেখানে বহু স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিল বলে জানা গেছে, যাদের বেশিরভাগই হতাহত হয়েছে।
এ ঘটনায় দগ্ধ অন্তত ৫০ জনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে, যারা সবাই গুরুতর দগ্ধ হয়েছে। এ ছাড়া উত্তরা এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে আরও বহু দগ্ধ ও আহত শিক্ষার্থী ভর্তি আছে।
দুর্ঘটনার পরপর উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। উত্তরাসহ আশপাশের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হতাহতদের উদ্ধার করা শুরু করে। পরে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় বিজিবি ও সেনাবাহিনী। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে হতাহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর জানিয়েছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। দুপুর ১টা ৬ মিনিটে এটি উড্ডয়ন করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটি উত্তরা মাইলস্টোন কলেজের ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। বিমানটির পাইলট ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর। হাসপাতালে ভর্তিরত অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
এ ঘটনায় শোক জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শোক বার্তায় তিনি বলেন, ‘বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। দুর্ঘটনায় বিমানসেনা ও মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মচারীসহ অন্যান্যদের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। জাতির জন্য এটি একটি গভীর বেদনার ক্ষণ। আমি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালসহ সকল কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার নির্দেশ প্রদান করছি।’
আপনার মতামত লিখুন :