দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত এবং নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্তত ১২টি জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা বা সাময়িক প্লাবনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
বুধবার (১৩ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে পূর্বাভাস কেন্দ্র জানায়, তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে লালমনিরহাট, নীলফামারি, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজবাড়ী, ফরিদপুর, পাবনা, মানিকগঞ্জ, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও ঢাকা জেলার নদীসংলগ্ন এলাকায় সাময়িক প্লাবনের সম্ভাবনা রয়েছে।
পাউবো জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভারতের আসাম ও পশ্চিমবঙ্গসহ রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এছাড়াও আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশেও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এসব নদীর পানি আরও বাড়তে পারে এবং বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে, বিশেষ করে তিস্তা নদীর। এতে করে আশপাশের এলাকাগুলোতে বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে।
পদ্মা নদীর পানি আগামী তিনদিন বাড়তে পারে এবং সতর্কসীমায় পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, যমুনা নদীসহ ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি আগামী তিনদিন বাড়বে এবং পরে কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে।
উত্তরের নদীগুলোর পরিস্থিতি
রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের মহানন্দা, করতোয়া, যমুনেশ্বরী, পুনর্ভবা ও ঘাঘট নদীর পানির স্তর বাড়ছে। এসব নদীর পানিও আগামী তিনদিন বৃদ্ধি পেতে পারে। পাশাপাশি আত্রাই নদীর পানি সতর্কসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের সোমেশ্বরী, ভুগাই ও কংস নদীর পানি বাড়ছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় এসব নদীর পানি সতর্কসীমা ছুঁতে পারে। অন্যদিকে, সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, লুবাছড়া ও ঝালুখালি নদীর পানি কিছুটা কমেছে।
এছাড়া মনু, ধলাই, খোয়াই ও জিঞ্জিরাম নদীর পানি আপাতত স্থিতিশীল থাকলেও আগামী ২৪ ঘণ্টায় তা বাড়তে পারে।
পাউবো আরও জানিয়েছে, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোয়ার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি আগামী তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন