ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমাদের দেশে মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডায় যে যার ধর্ম সুন্দরভাবে পালন করছে। যদিও মাঝে-মাঝে মিডিয়াতে কিছু সম্পূর্ণ গুজব ও অসত্য তথ্য প্রচার হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ধর্ম নিয়ে অপপ্রচারের মাধ্যমে দুর্বৃত্তদের ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা সম্পর্কে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ চত্বরে বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত-চট্টগ্রামের উদ্যোগে আজিমুশ্শান মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কালজয়ী জীবনি এবং আদর্শ যদি আমরা সমাজ এবং বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারি, তাহলে আমাদের জীবন আলোকিত হবে। ওনার জীবন আদর্শ আমাদের জন্য একটি বাতিঘর, তাই এটি ছড়িয়ে দিতে পারলে আমাদের জীবন স্বার্থক হবে এবং এটি ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। গতবছর আমরা সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে ঈদে মিলাদুন্নবী ও সীরাতুন্নবী পালন করেছি। সামনের দিনগুলোতেও আমাদের হিংসা-বিভেদ ভুলে একসঙ্গে চলতে হবে।
বিগত সরকার দেশের অর্থনীতিকে দুর্নীতির মাধ্যমে ধ্বংস করে দিয়েছে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার রিজার্ভ ২০ মিলিয়ন থেকে ৩২ মিলিয়নে উন্নিত করেছে। আমরা দেশের রিজার্ভ ৩২ মিলিয়নে রেখে যাচ্ছি, যাতে নির্বাচনের পর যে সরকার আসবে তারা সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনা করতে পারে। তাদের যেন দেশ পরিচালনায় ব্যাঘাত না ঘটে।
গত ৫৪ বছর দেশকে যারা তিলে-তিলে গড়ে তুলেছেন তাদের সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করে তিনি বলেন, দেশ পরিচালনার জন্য সৎ, নেককার এবং পরহেজগার মানুষদের দায়িত্ব দিতে হবে। যারা ঘুষ ও সুদ থেকে বিরত থাকবে, চোখের সামনে কোটি টাকা পড়ে থাকলেও পিছনে ফিরে তাকাবেনা, এমন ব্যক্তিদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে। পরহেজগার আলেমরা দেশের টাকা মেরে বিদেশে বাড়ি বানায় না।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। তা সবার ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিয়ে আমরা আমাদের পুরনো জীবনে ফিরে যাবো।
তিনি বলেন, এই বছর ধর্ম মন্ত্রণালয় হাজীদের ৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে। ১০৬ জন হাজীদের মধ্যে চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। এইগুলো না দিলেও কেউ জানতো না। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজে করে হাজীদের সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে যে জাহাজের প্রয়োজন তা আমাদের নেই। কিন্তু তবু আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি এতে সরকারের ২ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে। এটি ব্যবস্থা করতে পারলে হজে যেতে যাতায়াত খরচ বিমানের থেকে ৪০ শতাংশ কমে যাবে।
বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত-চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ড. মাওলানা সাইয়েদ মোহাম্মদ আবু নোমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের খতিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’র বোর্ড মেম্বার আল্লামা সাইয়েদ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরী আল-মাদানী, প্রখ্যাত মুফাস্সীরে কুরআন মাওলানা ক্বারী আব্দুল্লাহ আল-আমিন, আইআইইউসি’র সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. মাওলানা আবু বকর রফিক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের প্রফেসর ড. আ ক ম আব্দুল কাদের প্রমুখ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন