শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০৮:৫৬ এএম

রেজিস্ট্রেশন বিভ্রাট, শিক্ষকের ভুলে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০৮:৫৬ এএম

রায়কালী উচ্চ বিদ্যালয়। ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

রায়কালী উচ্চ বিদ্যালয়। ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন ফি নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির অভিযোগ উঠেছে। নির্ধারিত সময় পার হলেও প্রধান শিক্ষক শিক্ষা বোর্ডে রেজিস্ট্রেশন ফি জমা না দেওয়ায় পরবর্তীতে বিলম্ব ফি দিয়ে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

এ ছাড়া সিলেবাসের বাইরে কেনা প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ, নিয়মিত দেরিতে বিদ্যালয়ে আসা, নির্ধারিত সময়ে শিক্ষকদের হাজিরা স্বাক্ষর না নেওয়া, অনলাইনের বাইরে হতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।

তবে প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন, নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনের ফি শিক্ষা বোর্ডে জমা দেওয়ার বিষয়টি তিনি জানতেন না। পরে শিক্ষার্থী প্রতি ৫০ টাকা জরিমানা দিয়ে বোর্ডে টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত আদায়কৃত টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী প্রতি ৩১৬ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারণ করে গত ১৯ জুন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড একটি পত্র জারি করে। সেখানে বলা হয়, চলতি বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জরিমানা ছাড়া ৩১৬ টাকা হারে ফি বোর্ডে জমা দিতে হবে। আর জরিমানাসহ ফি নির্ধারণ করা হয় ৩৬৬ টাকা। কিন্তু ওই পত্রটির প্রতি ভ্রুক্ষেপ করেননি প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেন।

নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর গত ১ ডিসেম্বর তিনি ১১৬ জন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে জনপ্রতি ৫০ টাকা বিলম্ব ফিসহ ৩৬৬ টাকা হারে বোর্ডে ফি জমা দেন। পরে তিনি বিনা রসিদে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিলম্ব ফিসহ ৪০০ টাকা আদায় করেন। এতে রেজিস্ট্রেশন করতে প্রতি শিক্ষার্থীকে ৮৬ টাকা করে অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে।

বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক প্রতিদিন বিদ্যালয়ে দেরিতে আসেন। এতে নির্ধারিত সময়ে শিক্ষকরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে পারেন না।

এ ছাড়া বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরির কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষক বাইরের কেনা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণ করছেন। ফলে সিলেবাসের বাইরে প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

সরকারি বিধি অনুযায়ী, অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা থাকলেও তিনি হাতে হাতে ফরম বিক্রি করে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তার এসব কর্মকাণ্ডে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে ১ ডিসেম্বর থেকে রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। আমাদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৪০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনো রসিদ দেওয়া হয়নি।

তা ছাড়া চলমান বার্ষিক পরীক্ষায় সিলেবাসের বাইরে থেকে অনেক প্রশ্ন আসছে, এতে আমাদের পরীক্ষা খারাপ হচ্ছে। বিষয়টি হেড স্যারকে জানালেও কোনো সমাধান পাইনি।

খাতিজা খাতুন নামের এক অভিভাবক বলেন, প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। তিনি নিজের ইচ্ছামতো চলেন। তার অর্থ কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে এর আগেও একাধিকবার শিক্ষা প্রশাসনে অভিযোগ করা হয়েছে, কিন্তু তারপরও তিনি সংশোধন হননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষক প্রতিদিন দেরিতে বিদ্যালয়ে আসেন। আমরা যথাসময়ে এলেও তার কক্ষে তালা থাকায় হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে প্রতিদিন বিলম্ব হয়। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র শ্রেণিশিক্ষকদের তৈরি করার কথা থাকলেও তিনি আমাদের কাছ থেকে প্রশ্ন না নিয়ে বাইরে থেকে কিনে এনে বার্ষিক ও দশম শ্রেণির নির্বাচনি পরীক্ষায় ব্যবহার করছেন। এতে শিক্ষার্থীদের সিলেবাসের বাইরে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ ছিল। আমরা সেগুলো তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। বর্তমানে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোনো বিধান নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মো. শামীম হাসান মুঠোফোনে বলেন, নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনে বোর্ড-নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত একটি টাকাও নেওয়া যাবে না। বোর্ডের ওয়েবসাইট নিয়মিত না দেখার কারণে শিক্ষার্থীদের জরিমানা দিতে হয়েছে, যা দুঃখজনক। শিক্ষকের ভুলের খেসারত শিক্ষার্থীরা দেবে এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!