ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ হামলার বিচার এবং জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম ও হামলার নির্দেশ দাতা ব্রিগেডিয়ার শামসের কুশপুত্তলিকা দাহ কর্মসূচি পালন করেছে দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কুশপুত্তলিকা দাহের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার রাতে পুলিশ-সেনাবাহিনী যৌথভাবে হামলা করে। এ সময় নুরুল হক নুর, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানসহ কমপক্ষে ১৫-২০ জন মারাত্মক আহত হয়। এ ছাড়াও আরও ৭০-৮০ জন আহত হয়। মারাত্মকভাবে আহত হয়ে তিন দিন আইসিইউতে ছিলেন নুর। এখনও নুরুল হক নুরসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ৮ জন ভর্তি আছে।’
আবু হানিফ বলেন, ‘সেনাবাহিনী ও পুলিশের হামলার স্পষ্ট ভিডিও থাকার পরও সরকার কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শনিবার সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।’
তিনি বলেন, ‘একই দিন ডিএমপি পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। কিন্তু ঘটনার ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও সরকার কিংবা ডিএমপি কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করে নাই।’
আবু হানিফ আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমের বিভিন্ন ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কোন কোন সদস্য নুরকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছিল তাদের কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। সরকারের মুখের কথার সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নাই।’
গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে, এ ক্ষেত্রে স্পষ্ট যে হামলায় জড়িতদের বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নুরুল হক নুরের ওপর হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
উচ্চতর পরিষদের সদস্য আব্দুজ জাহের বলেন, ‘এই সরকার আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, এই সরকারকে আমরা আমাদের সরকার মনে করি। আমরা সরকারকে বিচার নিশ্চিতের জন্য অনেক সময় দিচ্ছি, এই সময় দেওয়াকে দুর্বলতা না ভাবার অনুরোধ করছি।’
তিনি বলেন, ‘এই সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নিলে আগামী সপ্তাহ থেকে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা হবে। ভিপি নুরের ওপর হামলার নির্দেশ ভারত থেকে এসেছে, হামলার নির্দেশদাতা বিগ্রেডিয়ার শামস আল মামুনকে গ্রেপ্তার করলে হামলার প্রকৃত সত্যতা বেরিয়ে আসবে।’
জাহের আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যান্য সকল উপদেষ্টা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। অথচ নিন্দা জানানো তাদের কাজ না, তাদের কাজ হলো দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা।’
ছাত্র অধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আলী তোহা বলেন, ‘আমরা হাসিনাকে সরাইছি ৩৬ দিনে। আপনারা হাসিনার চেয়ে বড় হয়ে যান নাই। আপনারা সাবধান হয়ে যান, তা না হলে আপনাদের পরিণতিও ভয়াবহ হবে। এই ছাত্র সমাজ কিন্তু আপনাদের কোনো ছাড় দিবে না।’
ছাত্র অধিকার পরিষদের মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুজাহিদ মিজানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকার পরিষদের মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হাসিব মল্লিক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, এম আই রাসেল, সহসভাপতি ওমর ফারুক ফরাজি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জাহিদুল ইসলাম, সমাজসেবা সম্পাদক আর্বি হোসেন শাওন, দপ্তর সম্পাদক রাকিব প্রমুখ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন