বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৯:৪৬ এএম

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর তাগিদ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৯:৪৬ এএম

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আয়োজিত দিনব্যাপী আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা। ছবি- সংগৃহীত

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আয়োজিত দিনব্যাপী আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা। ছবি- সংগৃহীত

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে হবে। এর মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে রোহিঙ্গা সংকট নিরসন করতে হবে। তবে এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ঐক্য গুরুত্বপূর্ণ।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আয়োজিত দিনব্যাপী আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা এ অভিমত দিয়েছেন। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান নীতি গবেষণা কেন্দ্র ‘অ্যাম্প্লিফাইং দ্য রোহিঙ্গা ভয়েসেস অ্যান্ড অ্যাসপাইরেশন: আ স্ট্র্যাটেজিক ডায়ালগ অ্যাহেড অব ইউএনজিএ ২০২৫’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপের আয়োজন করে। দিনব্যাপী আলোচনায় উদ্বোধনী ও সমাপনী অধিবেশন ছাড়াও দুটি কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে সকালে সংলাপের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন ফরহাদ মজহার। আলোচনা সঞ্চালনা করেন নীতি গবেষণা কেন্দ্রের ট্রাস্টি অধ্যাপক শেখ তৌফিক এম হক।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো মোহাম্মদ সুফিউর রহমান।

তিনি বলেন, আরাকান আর্মিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য অপরিহার্য শর্ত হিসেবে মিয়ানমারের নাগরিকত্ব, ভোটাধিকার এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক শ্রম ও জোরপূর্বক নিয়োগ বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে, তাদের চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। আস্থা তৈরির জন্য রোহিঙ্গাদের জমি ও সম্পত্তির অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, স্থানীয় সংস্থা ও কাউন্সিলে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের মাঠপর্যায়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়া এবং সহনশীলতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পুনর্মিলনের বিষয়ে রোহিঙ্গা, রাখাইন ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যে সংলাপ আয়োজন করা জরুরি।

আলোচনায় আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য সব অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা, সহিংসতার পুনরাবৃত্তি রোধ করা, আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা তোলা, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) বাংলাদেশ উপকার্যালয়ের প্রধান পিটার কার্ন বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারে উদ্ভূত রাজনৈতিক সমস্যা, যার স্থায়ী সমাধানও মিয়ানমারেই আছে। বাংলাদেশ অভূতপূর্বসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে যে উদারতা প্রদর্শন করেছে, তার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের কাছ থেকে আরও স্বীকৃতি প্রাপ্য।

দ্বিতীয় সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ভুল হবে। এটি একটি মানবিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। রোহিঙ্গারা একটি নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়, যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মিয়ানমারে বসবাস করছে। মিয়ানমার সরকার তাদের পরিচয়ে ধর্মীয় রং দেওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য এটি মানবিক সমস্যা। জাতিসংঘের সক্রিয় সদস্য, আন্তর্জাতিক সমাজের দায়িত্বশীল অংশ এবং বাংলাদেশের নৈতিক দায়িত্ব হলো এই সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজা।

কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান জাতিসংঘ করতে পারবে না। দেশের জনগণের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা ও ঐক্যের মাধ্যমে এর সমাধান করতে হবে। এ কারণেই সমস্যার মূল সমাধান নির্ভর করছে জনগণের মধ্যে বোঝাপড়া ও গণতান্ত্রিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার ওপর।

ফরহাদ মজহার আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান নিছক কারিগরি নয়, বরং রাজনৈতিক প্রশ্ন। তাই এর সমাধানও রাজনৈতিকভাবে হতে হবে। ভারতের ভূমিকাও এখানে উপেক্ষা করার মতো নয়—এটি আগামী দিনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে ।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং ওসমানী সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান সামরিক পথে করতে চেয়েছিল। বিষয়টি এক জেনারেলের কন্যা ও জেনারেল নিজে তৈরি করেছেন এবং বর্তমানে আরও দুই জেনারেল এটি পরিচালনা করছেন। এটি (রোহিঙ্গা সংকট) প্রথম দিন থেকেই একটি সামরিক অভিযান, যা কয়েকটি ধাপে পরিচালিত হয়েছে।

সংলাপে আরও বক্তৃতা করেন নেক্সাস ডিফেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রেসিডেন্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ হাসান নাসির বিএনপির শামা ওবায়েদ, জামায়াতে ইসলামীর এহসান জুবায়ের, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম এবং প্রথম আলোর কূটনৈতিক প্রতিবেদক রাহীদ এজাজ। অনুষ্ঠানের শেষে ঢাকা ঘোষণাপত্র পাঠ করেন নীতি গবেষণা কেন্দ্রের ট্রাস্টি এবং মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি সুলতান জয়নাল আবেদিনের শিক্ষক মাহবুবুল হক।

Link copied!