চাকরির পেছনে না ছুটে তরুণদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন,‘আমাদের লক্ষ্য প্রত্যেক তরুণ যেন নিজের জন্যই নয়, অন্যদের জন্যও কর্মসংস্থান তৈরি করতে শেখে।’
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম ইতোমধ্যেই প্রমাণ করেছে যে তারা সমাজ পরিবর্তনের চালিকাশক্তি। আমরা তাদের তথ্যপ্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, নবায়নযোগ্য শক্তি ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এই সব আধুনিক খাতে দক্ষ করে তুলতে বিনিয়োগ করছি।’
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশ সরকার একটি স্থায়ী মাধ্যম চালু করছে, যেখানে মাঠপর্যায়ের তরুণদের সরাসরি যুক্ত করা হবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে। এ উদ্যোগের লক্ষ্য হচ্ছে তরুণদের মতামত ও প্রয়োজনগুলো সরাসরি নীতিগঠনে প্রতিফলিত করা।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই দেশব্যাপী একাধিক পরামর্শ সভার আয়োজন করা হয়েছে। এসব সভায় তরুণরা নেতৃত্ব বিকাশ, দক্ষতা উন্নয়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আগ্রহ ও প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেছেন।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্ম কেবল বক্তব্য দিয়ে থেমে থাকতে চায় না। তারা চায় সরাসরি অংশগ্রহণ করতে-অনলাইন ও অফলাইন উভয় মাধ্যমেই। তরুণরা বিশ্বাস করে, তাদের কথা শোনার পাশাপাশি ফলাফলও দেখতে হবে। তাই তারা চায় নিয়মিত অগ্রগতি প্রতিবেদন, খোলামেলা সংলাপ এবং জবাবদিহিতামূলক নীতি কাঠামো।’
তিনি বলেন, ‘তরুণদের সঙ্গে কার্যকর সংলাপ এবং তাদের নেতৃত্বকে উৎসাহিত না করলে, আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টা পূর্ণতা পাবে না।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হলে তা হতে হবে সম্পূর্ণ অন্তর্ভুক্তিমূলক। নারী, সংখ্যালঘু, প্রতিবন্ধী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তরুণদের নেতৃত্বেও সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন উদ্যোক্তা শুধু নিজের নয়, আশেপাশের আরও অনেক মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে। আমরা চাই, তরুণরা সেই পরিবর্তনের কারিগর হোক।’
তিনি আরও বলেন, একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশ তখনই সত্যিকার অর্থে এগিয়ে যাবে, যখন দেশের প্রতিটি তরুণ স্বপ্ন দেখবে, উদ্যোগ নেবে এবং সাহসের সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন