রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ০৯:৪৪ পিএম

হঠাৎ ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে কেন এত প্রশ্ন?

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ০৯:৪৪ পিএম

উপদেষ্টামহল। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

উপদেষ্টামহল। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের একটি অংশ ‘সেফ এক্সিট’ খুঁজছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের এমন বক্তব্য ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড়। উপদেষ্টামহলে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার ঢেউ। একে একে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছেন সরকারের শীর্ষ উপদেষ্টারা।

নাহিদ ইসলামের অভিযোগ, ‘বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা জনগণের বিশ্বাস ও আন্দোলনের চেতনার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ তৈরি করে এখন দায়িত্ব ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজছেন।’

তিনি দাবি করেন, ‘যাদের ওপর আস্থা রাখা হয়েছিল, তাদের অনেকেই এখন ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে ‘সেফ এক্সিট’ নিতে চাচ্ছেন। সময়মতো তাদের নাম প্রকাশ করা হবে।’

পাল্টা অবস্থান

নাহিদের বক্তব্যের পরপরই একাধিক উপদেষ্টা কঠোরভাবে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমি এক্সিট খুঁজছি না। আগে যেমন ঝড়-ঝঞ্ঝা মোকাবিলা করে দেশে থেকেছি, ভবিষ্যতেও এ দেশেই থাকব।’

তিনি আরও বলেন, ‘নাহিদ ইসলাম কী কারণে এমন মন্তব্য করেছেন, সেটা তারই ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত। অভিযোগ থাকলে তথ্য-প্রমাণসহ তা আনতে হবে।’

সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, “৭২ বছরের জীবনে কোনোদিন বিদেশে স্থায়ী হওয়ার কথা ভাবিনি। এখন যদি ‘সেফ এক্সিট’ ভাবতে হয়, সেটা হবে দুঃখজনক।”

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল মন্তব্য করেন, ‘আমাদের কোনো সেফ এক্সিটের দরকার নেই। বরং পুরো জাতিকেই আত্মবিধ্বংসী রাষ্ট্রকাঠামো থেকে সেফ এক্সিট প্রয়োজন।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমার ছেলেমেয়ে সবাই দেশেই। আমি একা বিদেশে গিয়ে কী করব?’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, ‘আমি নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা, সুতরাং সেফ এক্সিট আমার জন্য নয়। আমি এ দেশেই থাকব।’

এনসিপির অভ্যন্তরে অসন্তোষ

‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গে নাহিদের বক্তব্যের সঙ্গে সমর্থন জানিয়েছেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘কিছু উপদেষ্টা দায়সারা দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নির্বাচন শেষ করে এক্সিট নিতে চাইছেন। অথচ পৃথিবীতে একটাই সেফ এক্সিট আছে—মৃত্যু।’

এনসিপির একাধিক শীর্ষ নেতার ভাষ্যমতে, মে মাসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচন ঘিরে বিএনপির আন্দোলন এবং লন্ডনে বিএনপি নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাতের পর থেকেই সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে দলের ভেতরে সন্দেহ দেখা দেয়।

এক সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা বিএনপি ও জামায়াতপন্থি অবস্থান নিয়েছেন, যা সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকারের দায়িত্ব ছিল নিরপেক্ষ থেকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, কেউ কেউ সেই দায়িত্ব থেকে সরে গিয়ে নিরাপদ প্রস্থান চাচ্ছেন।’

বিশ্লেষকদের মত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাজনীতিতে অনেক সময় কথার সঙ্গে বাস্তবতার ফারাক থাকে। তবে বিষয়টি নির্বাচন ও সরকারের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।’

অন্যদিকে, অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম মনে করেন, ‘দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা থাকলে বিচারের আওতায় আসা উচিত। সেফ এক্সিট বলে কিছু নেই—বাংলাদেশে সবাইকেই জবাবদিহি করতে হয়।’

Link copied!