ইতালির রোমে আয়োজিত বিশ্ব খাদ্য ফোরামের সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ছোট ভূমির দেশ। আয়তনে ইতালির অর্ধেক। কিন্তু আমরা ১৭ কোটি ৩০ লাখ মানুষকে খাওয়াই।’
‘পাশাপাশি আশ্রয় দিচ্ছি ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে, যারা মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে পালিয়ে এসেছে’, বিশ্ব খাদ্য ফোরামের সমাবেশে যোগ করেন ড. ইউনূস।
রোমে স্থানীয় সময় সোমবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ‘আমরা ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি, যা আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য।’
‘আমরা বিশ্বের শীর্ষ ধান, শাকসবজি ও মিঠাপানির মাছ উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি। আমাদের কৃষকেরা ফসল চাষের ঘনত্ব ২১৪ শতাংশে উন্নীত করেছেন’, বলেন তিনি।
-20250415093637-20251013180638.webp)
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘আমরা ১৩৩টি জলবায়ু-সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছি। আমরা কৃষক মেকানাইজেশনে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দিয়েছি। শক্তিশালী খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থাগড়ে তুলেছি।’
তিনি বলেন, ‘শিশুদের খর্বতা কমেছে, খাদ্যতালিকা বৈচিত্র্যময় হয়েছে মাটি, পানি ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার মাধ্যমে। কৃষি আরও সবুজ হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, “আমি আনন্দিত যে ‘ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালাচারাল অরগানাইজেশন (এফএও)’ কর্তৃক ২০১৬ সালে গঠিত ‘নোবেল পিস লরিয়েটস অ্যালায়েন্স ফর ফুড সিকিউরিরটি অ্যান্ড পিস’, যার একজন সদস্য আমি; সেটি এখন এফএও’র একটি মাইলফলক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।”
‘আমি আশা করি, এটি আরও নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করবে’, যোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিশ্বের নীতিনির্ধারক, গবেষক ও উদ্যোক্তারা খাদ্য ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে মতবিনিময় করেন। এবারের ইভেন্টটি ১০ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত রোমে এফএও সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এর আগে ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টে যোগ নিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত রোববার (১২ অক্টোবর) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় ইতালির রাজধানী রোম পৌঁছেন।
সফরসূচি অনুযায়ী ফোরামের মূল অধিবেশনে ভাষণের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এসব বৈঠকে খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য নিরসন ও টেকসই উন্নয়নসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার এই সফরকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সক্রিয় কূটনৈতিক উপস্থিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ১৫ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
