আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করতে পারবে বলে জানিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, আইনিভাবে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলই ভোটে অংশ নেওয়ার অধিকার রাখে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করলেও জাতীয় পার্টির মতো নিবন্ধিত দলগুলোকে নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো বাধা দেবে না সরকার।’
একাত্তর টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাতকারে শফিকুল আলম এসব কথা বলেন।
এদিকে, জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি এরই মধ্যে জানিয়েছে, তারা কেবল তখনই নির্বাচনে অংশ নেবে যদি সব দলের জন্য সমান ও স্বচ্ছ প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হয়। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত না হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া কঠিন হবে।
২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল জাতীয় পার্টি। তখনকার রাজনৈতিক বাস্তবতায় একদিকে সংসদে বিরোধীদলের ভূমিকায় থাকা, অন্যদিকে মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়া—দুটি ভূমিকার দ্বৈত অবস্থান নিয়ে দলটি ব্যাপক সমালোচিতও হয়।
শুধু জাতীয় পার্টি নয়, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ আরও ১৩টি দল দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তে প্রায় নিঃশর্ত সঙ্গী হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি একেবারেই বদলে যায়। নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় কিংবা ঐকমত্য কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের আলোচনাতেও তাদের জায়গা হয়নি। এমনকি কিছু মহল থেকে এসব দলকে নিষিদ্ধ করার দাবি পর্যন্ত উঠে আসে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর ঐকমত্য কমিশন, সরকার, নির্বাচন কমিশনের কোনো আলোচনাতেই রাখা হয়নি দলগুলোকে। এমনকি কিছু মহল জাতীয় পার্টিসহ কিছু দলকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছিল। তবে এখন অন্তর্বর্তী সরকার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া যেমন জুলাই সনদ বা ইসির সংলাপে ডাক না দিলেও ভোটে অংশগ্রহণে কোনো বাধা দিতে চাইছে না।
শফিকুল আলম বলেন, আইন জাতীয় পার্টির নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ করে দেয়নি। তবে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট, দলটি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। রিফাইন্ড বা অন্য কোনো নামে তারা ভোটে অংশ নিতে পারবে না। তাদের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টি এরই মধ্যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মাঠের পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনা করবে।
দলটির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানিয়েছেন, ভোটের নিরাপত্তা, প্রার্থী ও ভোটারদের নিরাপত্তা, পোলিং এজেন্টদের সুরক্ষা এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করে দলটি সিদ্ধান্ত নেবে।
জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট গঠনের সম্ভাবনাও বিবেচনা করছে, তবে এটি মূলত নির্বাচনের পরিবেশ ও নিরাপত্তার ওপর নির্ভর করবে।



