মঙ্গলবার, ০৬ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মো. সাইফুল ইসলাম

প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৫, ০১:৫৭ পিএম

চিংমা খিয়াং হত্যাকাণ্ড

ন্যায়বিচারের আহ্বান ও বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ হোক

মো. সাইফুল ইসলাম

প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৫, ০১:৫৭ পিএম

ন্যায়বিচারের আহ্বান ও বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ হোক

শিশু সন্তান কোলে নিহত চিংমা খিয়াং। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গম তিন্দু ইউনিয়নের মংখয় পাড়ায় ঘটে যাওয়া বর্বর হত্যাকাণ্ড শুধু একটি মায়ের মৃত্যু নয়, এটি আমাদের বিবেকের মৃত্যু, মানবতার চরম অবক্ষয়ের প্রতিচ্ছবি। মাত্র ১৮ মাস বয়সী শিশুকে কোলে নিয়ে জুমে কাজ করছিলেন তিন সন্তানের জননী চিংমা খিয়াং। সেখানেই সকালে (৫ মে) তিনি ধর্ষণের শিকার হয়ে নৃশংসভাবে নিহত হন-ভাঙা মাথা, উপড়ানো চোখ-এই দৃশ্য কোনো সভ্য সমাজ কল্পনাও করতে পারে না।

এমন জঘন্য অপরাধের পর, যখন পুরো জাতি ক্ষোভে, বেদনায় স্তব্ধ, তখনই লক্ষ্য করা যাচ্ছে-এ ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে চেনা এক ‘দায়বদ্ধতার খেলা’। ইতিমধ্যেই কিছু আঞ্চলিক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সংগঠন ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। ন্যায়ের প্রশ্নকে পাশ কাটিয়ে তারা সরাসরি ঘটনার দায় চাপাচ্ছে পাহাড়ি-বাঙালি বিভাজনের নিরিখে। কোনো প্রমাণ ছাড়াই বাঙালিদের উপর দায় চাপিয়ে একধরনের গোষ্ঠীগত উত্তেজনা তৈরি করা হচ্ছে।

এই দায় চাপানোর সংস্কৃতি কোনো নতুন বিষয় নয়। অতীতেও দেখা গেছে, পাহাড়ে কোনো অপরাধ ঘটলেই কিছু সংগঠন তা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। এতে দুইটি ভয়াবহ পরিণতি দেখা দেয়:

প্রথমত, প্রকৃত তদন্ত ব্যাহত হয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

দ্বিতীয়ত, সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয় এবং পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে অবিশ্বাস ও উত্তেজনা বাড়ে।

আমরা যেন ভুলে না যাই-চিংমা খিয়াং একজন নারী, একজন মা, একজন শ্রমজীবী মানুষ। তাঁর ধর্ষণ ও হত্যার বিচার চাওয়ার বিষয়টি কোনো জাতিগত বা রাজনৈতিক প্রশ্ন নয়, এটি ন্যায়ের প্রশ্ন, মানবিকতার প্রশ্ন। এই ঘটনায় অপরাধী যেই হোক না কেন-পাহাড়ি হোক বা বাঙালি-তার বিচার হওয়া উচিত কঠোরভাবে, দৃষ্টান্তমূলকভাবে।

কিন্তু এর ফাঁকে ‘গণতন্ত্র’ বা ‘অধিকার’ নামের মুখোশ পরে অপরাধীদের আড়াল দেওয়ার সংস্কৃতি থামাতে হবে। পাহাড়ে অপরাধের বিচার যেন জাতিগত রাজনীতির কারণে থমকে না যায়, তা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

আমার জোর দাবি-
১. চিংমা খিয়াং হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ, পেশাদার ও দ্রুত তদন্ত হোক।
২. অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা হোক।
৩. বিভেদমূলক গুজব, উসকানি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দোষ চাপানো বন্ধ হোক।
৪. রাষ্ট্র যেন মা হারানো শিশুটির দায়িত্ব গ্রহণ করে তার নিরাপদ ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দেয়।

এটি শুধু চিংমা খিয়াং-হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচারের প্রশ্ন নয়, এটি পুরো সমাজের সামনে একটি পরীক্ষার মুহূর্ত-আমরা কি ন্যায়কে রাজনৈতিক স্বার্থের কাছে হারিয়ে দেব, নাকি অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে দেখে তার বিচার করবো?

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!